Sunday, November 24, 2024
Homeসিলেট বিভাগসিলেটআর নয় ডিবির হাওর, সিলেটের জৈন্তাপুরের আরেক শাপলাস্বর্গ

আর নয় ডিবির হাওর, সিলেটের জৈন্তাপুরের আরেক শাপলাস্বর্গ

বিশেষ প্রতিনিধি:

ভোরে ফোটা সতেজ শাপলা বেলা বাড়তে বাড়তে মিইয়ে যেতে থাকে,

ভোরে সিলেট শহর থেকে যখন বের হই, চারপাশ তখন কুয়াশামাখা। পথে সঙ্গী হলেন সংবাদকর্মী রেজোয়ান সাব্বির। ঘণ্টা দেড়েক মোটরবাইক চালিয়ে পৌঁছে গেলাম ডিবির হাওর। সাতসকালেই সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের কলরবে মুখর হয়ে উঠেছে শাপলা বিল। হুড়োহুড়ি করে ডিঙিনৌকায় উঠছেন তাঁরা। ঘাট ছেড়ে আস্তে আস্তে বিলের অন্য প্রান্তের দিকে যাচ্ছে নৌকা, ঘুরছে ইতিউতি। শাপলা বিলে পাখির ওড়াউড়িও দেখার মতো। প্রাতরাশে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পাখিকুল। এসব দেখতে দেখতেই খানিকটা সময় চলে গেল। পৌষের সূর্য তাপ ছড়াতে শুরু করল। এবার আমরা মূল গন্তব্যের পথে পা বাড়ালাম। ওটাও একটা হ্রদ, ‘শাপলা হ্রদ’ নামে যা পরিচিতি পেয়েছে।

 

 

সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ধরে বাইক চলছে। জৈন্তাপুর উপজেলার চেনা পথ। শ্রীপুর এলাকার রাংপানি পর্যটনকেন্দ্র এখন সবার পছন্দের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। রাংপানির উল্টোদিকে সড়কের বাঁ দিকে শ্রীপুর বাজারের সামনেই শাপলা হ্রদ। সবুজে মোড়ানো শ্রীপুরের সৌন্দর্য দেখে জাফলং-তামাবিল অনেকেই যান। কিন্তু তাঁদের নজর এড়িয়ে যায় এই হ্রদ।

 

শীতে যাঁরা সিলেট বেড়াতে যাচ্ছেন, দর্শনীয় স্থানের তালিকায় তাঁরা রাখতে পারেন এই শাপলা হ্রদ,

 

১৫ মিনিটের মধ্যে শ্রীপুর পৌঁছে গেলাম। সড়ক থেকে চা-বাগানের টিলার ঢাল ধরে বাইক থামালাম। ২০০ ফুট নিচে শাপলা হ্রদ। শাপলা ফুটে থাকা জলাশয়টি শ্রীপুর চা-বাগানেরই অংশ। কুয়াশায় মোড়ানো টিলার ভাঁজে স্বচ্ছ জলের হ্রদ। টলমলে পানিতে শীতের সকালে পাপড়ি মেলে আছে লাল শাপলা। এর লতাপাতায় চুপটি করে বসে থাকা শীতের পাখি উড়ছে ক্ষণে ক্ষণে। সড়কের এক পাশে পরদেশি পাহাড়, অন্য পাশে চা-বাগানের সুউচ্চ টিলা।

 

শাপলা হ্রদে নৌকা নেই, পাড় ধরে পায়ে হেঁটেই হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হবে,

নিচে নামতেই সবুজ টিলা ও ভারতের খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে উড়ল পাখির ঝাঁক। কিচিরমিচির শব্দে জানাল শীতের অভ্যর্থনা। ক্ষণিকের জন্য হ্রদের লাল শাপলা আর পাহাড়ি প্রকৃতির সবুজে নিজেকে হারিয়ে ফেললাম। চেনা-অচেনা পাখির সুর শুনে মুক্ত বাতাসে বুকভরে শ্বাস নিলাম। মন ভরে ছবি তুললাম। বিদায়বেলায় মনে বার কয়েক শুধু মনে হলো, প্রকৃতির এমন মেলবন্ধন অটুট থাকুক।

 

 

শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করার সেরা সময় অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ,

 

শীতে যাঁরা সিলেট বেড়াতে যাচ্ছেন, দর্শনীয় স্থানের তালিকায় তাঁরা রাখতে পারেন এই শাপলা হ্রদ। শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করার সেরা সময় অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ। ভোরে ফোটা সতেজ শাপলা বেলা বাড়তে বাড়তে মিইয়ে যেতে থাকে, তাই ভোরেই হাজির হতে হবে।

 

সিলেট শহর থেকে জৈন্তাপুরের শ্রীপুরের শাপলা হ্রদের অবস্থান ৪৩ কিলোমিটার। ডিবির হাওর ঘুরেও শ্রীপুরের শাপলা হ্রদে আসতে পারেন। ডিবির হাওর শাপলা বিল আর এই হ্রদের মধ্যে মিনিট ১৫–র দূরত্ব। আবার জাফলং যাওয়ার সময়ও একবার ঢুঁ মারতে পারেন হ্রদে।

 

শাপলা হ্রদে নৌকা নেই, পাড় ধরে পায়ে হেঁটেই হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হবে। বিলের পানিতে খাবার প্যাকেট কিংবা ময়লা-আবর্জনা ফেলবেন না। পরিবেশের ক্ষতি হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments