Friday, November 8, 2024
Homeখেলাধুলাক্রিকেটমানসিক অস্থিরতায় আছেন সাকিব আল হাসান

মানসিক অস্থিরতায় আছেন সাকিব আল হাসান

খেলাধুলা প্রতিদিন:

 

আগের সেই প্রাণোচ্ছলতা নেই। আনমনে এবং কিছুটা মনমরা দেখাচ্ছে তাঁকে। এই সাকিব আল হাসান যেন স্বভাববিরুদ্ধ। দেখলে যে কারও মনে হতে পারে, জীবনের কঠিন সময় পার করছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক। যেখান থেকে বের হওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করেও বের হতে পারছেন না।

আশায় বুক বেঁধে নিয়ম করে ব্যাটিং অনুশীলন করছেন নেটে। বিপিএল ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার ছেড়ে দিচ্ছেন দলের স্বার্থে। অথচ টি২০ ক্রিকেটে তিন বা চার নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে ভালোবাসেন তিনি। নিজেকে ফিরে পাওয়ার এই লড়াইয়ে সাকিব জয়ী হবেন বলে বিশ্বাস রংপুর রাইডার্সের কোচ সোহেল ইসলামের। তিনি এটাও জানেন, সহসা সবকিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার নয়। তাই সাকিবের সঙ্গে অন্যদেরও ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান রংপুর কোচের।

 

সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে সাকিব সিলেটে দলের সঙ্গে যোগ দেন ২৫ জানুয়ারি। পরদিন খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নেমে দুই রান করে আউট হন। যদিও বোলিংয়ে পুরোনো ছন্দ ধরে রেখেছেন। চার ওভারে ২১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। ২৭ জানুয়ারি দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ২৩ রানে এক উইকেট শিকার তাঁর। শেষের দিকে ব্যাটিংয়ে নামেননি।

 

 

সাকিবের সময় কেমন যাচ্ছে জানতে চাওয়া হলে কোচ সোহেল ইসলাম বলেন, ‘মানসিক অস্থিরতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এ রকম একটা কিছু হলে মনের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। বুঝতে পারছে না কীভাবে বিষয়টি ঠিক করবে। এক-দুই দিনে তো ঠিক হওয়ার নয়, সময় লাগবে।’

 

স্বাভাবিক সময় হলে ম্যাচের পরের দিন অনুশীলনে দেখা যেত না সাকিবকে। তিনিই কিনা এখন ম্যাচের আগে নেটে ব্যাটিং করেন। ম্যাচের পরদিন গতকাল ঐচ্ছিক অনুশীলন করেছেন সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের আউটারে। সোহেল ইসলামের সঙ্গে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ছিলেন সাকিবের নেটে।

প্রয়োজন হলে প্রতিপক্ষ দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কেও সাহায্য করতে উদারতা দেখান সালাউদ্দিন। সেখানে সাকিব তাঁর প্রিয় শিষ্য। কঠিন মুহূর্তে এই শিষ্যের পাশে থাকা প্রয়োজন মনে করেন তিনি।

 

 

সাকিব অনেক দিন ধরেই চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। দূরের বলে ব্যাট চালিয়ে তাঁকে আউট হতে দেখা গেছে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচে। মূলত বাঁ চোখের রেটিনায় সমস্যা থাকায় দূরের বল কাছে দেখেন বলে ধারাভাষ্যে বলেছিলেন সুনীল গাভাস্কার। যে কারণে শট খেলতে গিয়ে ভুল করে আউট হন।

চোখের সমস্যা গুরুতর হওয়ার পর ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের পর সিঙ্গাপুরে চোখের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কনজারভেটিভ (রক্ষণাত্মক) চিকিৎসার পথ বেছে নেন বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার।

এ ধরনের চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ। চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার সাকিবকে ধৈর্য দেখাতে হবে। কিন্তু তিনি তো বসে থাকার মানুষ নন। রান চাই ব্যাটে। তিনি চেষ্টা করছেন দ্রুত ব্যাটে বলের সংযোগ ঘটিয়ে রানে ফিরতে।

 

কোচ সোহেল অবশ্য তা মনে করেন না। তাঁর মতে, ‘সাকিব রান না করলেও কিছু যায় আসে না। ও কীভাবে স্বাভাবিক হতে পারে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। ওর পাশে আমরা সবাই আছি।’

 

রংপুর রাইডার্সের পরের ম্যাচ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে। অথচ কুমিল্লার কোচ সাকিবকে অনুশীলন করাচ্ছেন। লেগস্পিনার রিশাদকে সাকিবের নেটে বল করতে পাঠাচ্ছেন। এ থেকে পরিষ্কার, সাকিব তাদের কাছে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়ের চেয়েও বেশি কিছু। সে দেশের ক্রিকেটের সম্পদ। তাঁর ব্যাটে স্বাভাবিক ছন্দ ফেরা প্রয়োজন জাতীয় দলের স্বার্থে। কারণ জুনে টি২০ বিশ্বকাপ খেলবে বাংলাদেশ। যে দলের অধিনায়ক আবার সাকিব।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments