Friday, November 8, 2024
Homeসিলেট বিভাগকালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রামীন সন্ধ্যা বাতি হারিকেন ও লেম

কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রামীন সন্ধ্যা বাতি হারিকেন ও লেম

রামকৃষ্ণ তালুকদার,(বিশেষ প্রতিনিধি):::

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ থেকে কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে গ্রামীন সন্ধ্যা বাতি হারিকেন ও লেম। গ্রামীন সমাজের প্রতিটি ঘরে ঘরে এক সময় আলোর অন্যতম বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হতো সন্ধ্যা বাতি হারিকেন ও লেম। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের দু এক বাড়িতে হারিকেন এবং লেম পাওয়া গেলেও দেখা যায় ব্যাবহার না করায় সে গুলোতে ময়লা ও মরিচা পড়ে ব্যাবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এখন আর কোন ঘরে কিংবা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে হাজার বছরের ঐতিহ্যের বাহন সেই হারিকেন ও লেম এখন আর চোখে পড়ছে না।অথচ আজ থেকে ১৫/ ২০ বছর আগে ও বেশির ভাগ ঘরেই ব্যাবহার করা হতো হারিকেন ও লেম। আর বিশ বছর পরে এসে এর রুপ এখন পুরোটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে। ২০ বছর আগে ও ছিল এমন যে সারাদিন কর্মব্যস্ততা সেরে নারীরা ব্যাস্ত হয়ে পড়তেন সন্ধ্যায় ঘরের আলো জ্বালানো নিয়ে। কালের বিবর্তনে আজমিরীগঞ্জ সহ দেশের প্রায় জায়গা থেকে হারিয়ে গেছে এই হারিকেন ও লেম। বর্তমানে সামাজিক পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতিটি ঘরের চিএটাই পাল্টে গেছে। গ্রামীন সমাজের সন্ধ্যা বাতি ছিল হারিকেন ও লেম। তা এখন অতীত স্মৃতিতে পরিনত হয়েছে।সমাজ পরিবর্তন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও আধুনিকতার ছুয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হারিকেন ও লেম এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিদ্যুৎতের বাতি,চার্জার ও সৌর বিদ্যুতের নানা ধরনের ব্যাবহারের ফলে এখন হারিকেন ও লেম এর ব্যাবহার তেমন দেখা যায় না। উপজেলার গ্রামাঞ্চলে এখন আর এগুলো খুঁজে পাওয়া যাবে না।তবে যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে হারিকেন ও লেম এর জায়গা দখল করে নিয়েছে সৌর বিদ্যুৎতের আলো বা চার্জের লাইট।প্রতি সন্ধ্যায় হারিকেন চিমনি খুলে, ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে, চিপি খুলে কেরোসিন তেল ঢেলে আবার চিপি লাগিয়ে শলতার মধ্যে দেশলাইয়ের কাটি জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে তা নির্দিষ্ট সীমা রেখায় রেখে ঘরের মাঝে লাগিয়ে রাখতো।৫/৬ ইঞ্চি লম্বা এক ধরনের কাপড় ফিতা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। আলো কমানো ও বাড়ানো যেত।রাতে ঘুমানোর সময় সারা রাত হারিকেন অথবা লেম জ্বালিয়ে রাখা হতো।তখন এগুলো ছিল কয়েক প্রকার।ছিল পিতল ও সিলভারের।তবে সিলভার, টিন ও মাটির তৈরি জিনিসের ব্যবহার ছিল খুব বেশি। বাতির নলে আগুন জ্বালানোর জন্য ফিতা হিসেবে ব্যবহার করা হতো ছেড়া কাপড়।কাপড়ের টুকরো কিংবা পাটের সুতলি। চিকন আর লম্বা করে বলে বাতির নল দিয়ে ডুকিয়ে দিত।প্রতিদিন এর কিছু অংশ জ্বলে পুরে যেত।পরের দিন আবার একটু উপরের দিকে তুলে দিত।এক পর্যায়ে তা পুরে গেলে আবার নতুন করে লাগানো হতো।এটা ছিল নারীদের সন্ধ্যা বেলা কাজের বিশেষ একটি অংশ। এই বাতি দিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করত।এছাড়া ও রাতের রান্না বাড়া, খুঁটির শিল্প, হস্ত শিল্প, ধান মারা সহ সকল চাহিদা মেটানো হতো এই আলো দিয়ে। এখন আর চোখে পড়ে না হারিকেন ও লেম। যারা শহর এলাকায় বাস করছেন বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম তো চোখে দেখেনি হারিকেন ও বাতি।অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন কালের আবর্তনে ডিজিটাল যুগে এই হারিকেন ও বাতি নামক বস্তুটি কোন এক সময়ে স্মৃতির যাদুঘরে দেখা যাবে অতীত স্মৃতি হয়ে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments