খেলাধুলা প্রতিদিন:
সিলেটের মাঠে বিপিএলের খেলার জন্য রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়াম থেকে খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ফ্লাডলাইটের ১৬০টি বাল্ব। এ খবর জানাজানি হলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনে। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও রাজশাহীর বাসিন্দা খালেদ মাসুদ পাইলটও তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাজশাহী নগরীর তেরোখাদিয়ায় অবস্থিত শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে।
স্টেডিয়ামটিকে আইসিসির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি দীর্ঘ দিনেও। তবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে এ স্টেডিয়ামের স্বীকৃতি রয়েছে।
গত শুক্রবার মাঠ থেকে ফ্লাডলাইটের ১৬০টি বাল্ব, ব্লাস্ট ও ইগনেটর খোলা শুরু হয়। বিসিবির কর্মকর্তারা এসে হঠাৎ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের এগুলো খুলে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পরে অনেকটা গোপনেই এগুলো খুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে রাজশাহীর ক্রীড়াঙ্গনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, এই বাল্ব আর ফিরবে না।
সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, ‘বিষয়টা ডেকোরেটরের জিনিসপত্র এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার মতো। কতটা অব্যবস্থাপনা থাকলে বিপিএলের মতো একটা বড় টুর্নামেন্ট শুরু হবার পর বিসিবির মনে পড়ে যে সিলেটের ফ্লাডলাইট ঠিক নেই। এখানে লাইট লাগাতে হবে। এটা দুঃখজনক।’
পাইলট বলেন, ‘এগুলো এক স্থান থেকে অন্যস্থানে খুলে নিয়ে যাওয়া এবং লাগানোর খরচও অনেক বেশি।
সে টাকা দিয়ে টেন্ডার করে লাইট কিনে নিলেই তো হয়। এক জায়গার লাইট অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে হবে কেন? এগুলো আমাদের ক্রিকেটের জন্য ভাল দৃষ্টান্ত না। রাজশাহীর এই স্টেডিয়াম নিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা আছে। এটা আইসিসির ভেন্যু হবে। লাইটগুলো খোলার দরকার কি? এগুলোর মালিক তো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তারা দিল কেন?’
এ নিয়ে অবশ্য বিসিবির রাজশাহীর ভেন্যু ম্যানেজার ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক সদস্য সাইফুল্লাহ খান জেম কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গেই কথা বলার পরামর্শ দেন।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সিলিটের বিপিএল খেলার জন্য বিসিবি বাল্বগুলো নিয়ে গেছে। খেলা শেষে আবার দিয়ে যাবে।’
গত বছরের মে মাসে এই মাঠে বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মাঠে গড়ায়। এর আগে ২০০৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের তিনটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ এবং ২০১০ সালের দক্ষিণ এশীয় গেমসের চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
স্টেডিয়ামটিতে দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ১৫ হাজার। রাজশাহীর খেলোয়াড় ও ক্রীড়াপ্রেমিরা দীর্ঘদিন ধরেই মাঠটিকে আইসিসির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছেন। বিভিন্ন মহল থেকে আশ্বাসও দেওয়া হচ্ছে।