Sunday, November 24, 2024
Homeসিলেট বিভাগসিলেটসিলেটে দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে নদনদী

সিলেটে দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে নদনদী

বিশেষ প্রতিনিধি:

সিলেটের প্রধান নদী সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই, যাদুকাটা, মনুসহ বিভিন্ন নদী, খাল, পাহাড়ি ছড়া দখলে-দূষণ-ভরাটে অস্তিত্ব হরাচ্ছে। নদীর তীর জুড়ে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। কোথাও কোথাও তীর দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। তাছাড়া পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে শুরু হয়েছে নদীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া। খোদ বিভাগীয় সিলেট নগরীর পাশে সুরমা নদীর তীরে দেওয়াল নির্মাণ করে দখলে নিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী কাজিরবাজার মাছের কতিপয় আড়তদার।

 

এদিকে হবিগঞ্জের পুরোনো খোয়াই নদীর প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে দখল করা হয়েছে। ফলে শহরে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র জলাবদ্ধতা। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেখানে মাঝেমধ্যে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও তা মাঝপথে থেমে যায়। এছাড়া সুনামগঞ্জের পাহাড়ি নদী যাদুকাটার তীর ধসিয়ে বেআইনিভাবে বালি-পাথর উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। এতে নষ্ট হচ্ছে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ। বাড়িঘর, জমি বিলীনের শঙ্কায় উদ্বিগ্ন তীরবর্তী মানুষ। বিষয়গুলোকে নদীর বৈশিষ্ট্যের ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন পরিবেশবিদরা। তারা মনে করেন, এর সমাধান— নদীকে তার মতো চলতে দেওয়া। অবৈধদের উচ্ছেদ করে নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেওয়া।

 

 

সম্প্রতি সিলেট নগরীর পশ্চিম কাজীর বাজার এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, নদী তীর দখল করে পাকা করেছেন মৎস্যজীবিরা। পাকা দেওয়াল এবং নিচের ফ্লোর পাকা করার বিষয়টি স্বীকার করে কাজিরবাজার মত্স্য বাজারের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর বলেন, আড়তের মাছ প্রায় চুরি হয়ে যায়। তাই সুরক্ষার জন্য দেওয়াল তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সীমানার মধ্যে দেওয়াল করেছি। তারপরও প্রয়োজন হলে আমরা দেওয়াল ভেঙে নদীর জায়গা ছেড়ে দেব।

 

সিলেট জেলা বারের সাবেক সভাপতি ইইউ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, কয়েক বছর আগেও নদীর জায়গা দখল করে শৌচাগার তৈরি করা হয়। পড়ে সেটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাজিরবাজার এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, বাজারের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম প্রভাবশালী বিধায় তার বিরুদ্ধে অনেকে কথা বলতেই সাহস পাচ্ছেন না। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে নোটিশ দেবেন।

 

 

পরিবেশবাদীরা বলছেন, সিলেট বিভাগের অন্যতম প্রধান নদী সুরমা। দীর্ঘদিন ধরে এই নদী দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম বলেন, কাজিরবাজারে কয়েক মাস আগেও তারা নদীর জায়গা দখল করে শৌচাগার গড়ে তুলেছিল। পরে সেটি ভেঙে ফেলা হয়। এবার আমরা তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনে অভিযোগ করব। এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, প্রয়োজন হলে কাজিরবাজার মাছের আড়তে গড়ে তোলা দেওয়াল ভেঙে দেওয়া হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments