বিশেষ প্রতিনিধি:::
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নিয়েছিলেন আব্দুস শহীদ। একই সঙ্গে করে গেছেন মানুষের জন্য রাজনীতি। মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে পেশাদার জীবন শুরু করা মৌলভীবাজারবাসীর ভালোবাসার শহীদ মাস্টার এখন বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। তাঁর এই অর্জনে আনন্দের বন্যায় ভাসছে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার মানুষ।
৭৬ বছর বয়সী আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ গণমানুষের নেতা হিসেবে পরীক্ষিত এবং প্রমাণিত। মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাতবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়ে এ কথা প্রমাণও করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহীদ। ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে সর্বশেষ ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন– এমপি শহীদের বিজয় রথ থামতে দেয়নি এই এলাকার মানুষ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী হওয়ার সাফল্য যুক্ত হলো তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে। নতুন মন্ত্রিসভায় কৃষিমন্ত্রী করা হয়েছে উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদকে। মানুষ গড়ার কারিগর থেকে দেশ গড়ার অন্যতম কারিগরে আবির্ভূত হয়েছেন তিনি।
১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে জন্ম নেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ। স্থানীয় মুন্সিবাজার কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে সিলেট মদন মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক পাস করেন তিনি। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালেই ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় আব্দুস শহীদ জাতির পিতার ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৩ সালে কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে শুরু করেন পেশাজীবন।
১৯৯১ সালে প্রথম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হন আব্দুস শহীদ। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন দলের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে একই দলের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হয়ে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
আব্দুস শহীদের ব্যাপারে কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ের সাবেক সহকর্মী অধ্যাপক রফিকুর রহমান জানান, তাঁর হাত ধরে প্রথম পূর্ণ মন্ত্রী পেল মৌলভীবাজার। দেশের কৃষিমন্ত্রী হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের সব যোগ্যতাই রয়েছে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের।