Wednesday, November 27, 2024
Homeরাজনীতিআওয়ামীলীগআমি বাংলার মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই : শেখ হাসিনা

আমি বাংলার মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই : শেখ হাসিনা

বিশেষ প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেছেন, আমি বাংলার মানুষকে ভালোবাসি, তাদের ভালোবাসা পেতে চাই। আপনাদের মুখের দিকে তাকালেই আমি আমার বাবা-মাকে দেখি এবং শোক ভুলে যাই।

 

আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ফরিদপুর শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দুর্নীতি করতে আসিনি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে এসেছি।

 

আমি শেখ মুজিবের মেয়ে। এ জাতি কারো কাছে মাথা নত করবে না। এ নৌকা নূহ নবীর নৌকা। মহাপ্লাবন থেকে নূহ নবীর নৌকাই আমাদের রক্ষা করেছিল।

 

নৌকায় বিশ্বাস রাখুন, নৌকা দেবে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নৌকাকে বিজয়ী করুন। ফরিদপুরের মাটি নৌকার ঘাঁটি।

 

আমরা সাবমেরিন কেবল স্থাপন করে ইন্টারনেট চালু করেছি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে ছয় লাখ ৮৬ জন ফ্রিল্যান্সার তৈরি করেছি। দেশ-বিদেশে তারা তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারছে। আমরা ইতিমধ্যে ৩১টি জেলা ভূমিহীনমুক্ত করে ৪৮ হাজার গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে গৃহ প্রদান করেছি। হিজরা হরিজনসহ নিম্ন আয়ের কেউ বাদ যায়নি।’

 

তিনি বলেন, ‘আমরাই প্রথম বয়স্ক ভাতা চালু করেছি।

 

২৬ লাখ বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তকে কার্ড প্রদান করছি। প্রতিবন্ধীদের আমরা ভাগ্যের পরিবর্তন করছি। ইতিমধ্যে ২৯ লাখ ১০ হাজারকে ভাতা দিচ্ছি। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের ভর্তুকি দিয়ে পাঁচ কোটি পারিবারিক কার্ড তৈরি করে দিয়েছি। তারা টিসিবির মাধ্যমে কম টাকায় খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতে পারছে। মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ৮১৫টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করেছি। বিনা মূল্যে প্রতিবছর পয়লা জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিচ্ছি। তিন কোটি ৯৪ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও উপবৃত্তির আওতায় এনেছি।’

বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ফরিদপুরে আমার পিতা মাতৃভাষার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে জেল খেটেছিলেন। দেশ আজ স্বাধীন। জাতির পিতা যখন পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তখন তাঁকে পাকিস্তান নিয়ে যাওয়া হয়। সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১০ জানুয়ারি তিনি যখন ফিরে আসেন, তখন তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে প্রবেশ করেন। যখন এ দেশের কোনো রিজার্ভ ছিল না। তিন বছর সাত মাস দেশ পরিচালনা করে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলেন। জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায় করেন। এত কম সময়ে যা অন্য কোনো দেশ পারেনি। তিনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করান। বঙ্গবন্ধুর মতোই দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো আমার লক্ষ্য।’

 

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন দেশের উন্নয়নে ব্যস্ত, তখন একটি দল দেশকে পিছিয়ে নিতে চায়। এই দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করার জন্য তিনি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ চালু করেছিলেন। দীর্ঘ ২১ বছর পর বিএনপি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে। তখন দেশে পানি ছিল না, গ্যাস ছিল না, বিদ্যুৎ ছিল না। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশ গঠনে হাত দিই। বিদ্যুৎসহ সকল সমস্যার সমাধান করি। সব কিছু যখন সাজিয়ে আনি, তখন তারা চক্রান্ত করে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে। জঙ্গি, সন্ত্রাস ও দুঃশাসনে ভরে যায় দেশ। এটা হলো বিএনপির রাজনীতি। ২০০৮ সালে নির্বাচনে তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করে পরাজিত হয়। আওয়ামী লীগ আবার বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসে।’

 

তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবের বাংলায় কোনো মানুষ গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। কারো কোনো জমির এক ইঞ্চিও যেন অনাবাদি না থাকে। আমি গণভবনে শাকসবজি ও ফলমূলের চাষ করেছি। গণভবনের পুকুর থেকে অবসর সময় মাছ ধরি। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আপনারাও কোনো জমি অনাবাদি রাখবেন না। আপনাদের যার যেখানে জমি রয়েছে, শাকসবজি ও ফলমূলের চাষ করুন। আমরা সরকারে এসে সরকারি কর্মচারীসহ সব কর্মকর্তার বেতন বৃদ্ধি করেছি।’

 

বাংলাদেশে এখন ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বহাল রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’ তিনি এ সময় ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরা আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের জনতার কাছে পরিচয় তুলে ধরেন এবং তাদের বিজয়ের জন্য দোয়া কামনা করেন।

 

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ফরিদপুর -৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম হকের সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ফরিদপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী শামীম হক প্রমুখ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments