বিশেষ প্রতিবেদন:
আজ বৃহস্পতিবার দিনের আলো ফুরিয়ে যাবে তাড়াতাড়ি। সন্ধ্যে গড়িয়ে যে রাত নামবে, তা যেন কাটতেই চাইবে না।
কেন ২১ ডিসেম্বর বছরের দীর্ঘতম রাত, তা জানতে হলে শৈশবের সেই ভূগোল বইয়ের পাঠে ফিরে যেতে হবে। জানতে হবে সূর্যের উত্তরায়ন ও দক্ষিণায়নের গতিপ্রকৃতি।
পাঠ্যবইতে দীর্ঘতম দিন এবং দীর্ঘতম রাতের কথা সবাই পড়েছে। ২১ জুনকে বছরের দীর্ঘতম দিন বলা হয়, আর দীর্ঘতম রাত হলো ২১ ডিসেম্বর।
এই দীর্ঘতম রাত হয় সূর্যের দক্ষিণায়নের কারণে।
কেন রাত সবচেয়ে বড় হয়, এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। বছরে ছটি ঋতু। ঋতু বদলের সঙ্গে দিন ও রাতের সময়কালও বদলায়। বছরের ৩৬৫ দিন কখনো সমান থাকে না। কখনো দিন বড় রাত ছোট হয়, আবার কখনো তার উল্টো। ঠিক এভাবেই বছরে এমন একটা দিন আসে, যেখানে দিন সবচেয়ে ছোট হয়, এবং রাত সবচেয়ে বড়। আবার এর উল্টোটাও হয়।
সৌরজগতের নিয়ম অনুযায়ী, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরার সময় একদিকে একটু হেলে থাকে। ফলে কখনো উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছাকাছি আছে, আবার কখনো দক্ষিণ গোলার্ধ। ২১ জুন দিনটাতে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছাকাছি থাকে। তাই সূর্যের রশ্মি দীর্ঘসময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে পড়ে। সূর্য এদিন কর্কটক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে বা খাড়াভাবে কিরণ দেয়। তাই মনে হয় দিন শেষই হচ্ছে না। মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে দেশগুলিতে বেশি পরিমাণ সূর্যালোক পৌঁছায়। এর ফলে এই সময়কালে সেইসব দেশে গ্রীষ্মকাল থাকে। বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলে ‘সামার সলসটিস’ বা উত্তরায়ণ। এর পর থেকে দিন ছোট হতে শুরু করে।
ডিসেম্বর মাস থেকে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে, উত্তর গোলার্ধ চলে যায় অনেকটা দূরে। এই সময় উত্তরে সূর্যের আলো ক্ষীণভাবে পড়ে, ফলে সেখানে তখন শীতকাল, আর দক্ষিণে গরমকাল। ২১ ডিসেম্বর দিনটিতে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের থেকে অনেকটাই দূরে থাকে। ফলে সেখানে সূর্যের আলো এতটাই কম পড়ে যে, দিন খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় বলে মনে হয়। রাত হয় দীর্ঘ। একে বলে উইন্টার সলসটিস বা সূর্যের দক্ষিণায়ন। এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় হয় আর উত্তর গোলার্ধে রাত দীর্ঘতম হয়।