বিশেষ প্রতিনিধি:
নির্বাচন কমিশনের আপিল শুনানিতে আওয়ামী লীগের একজন, স্বতন্ত্র দুজনসহ মোট তিনজন বৈধ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়ে গেছে। ওই তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগে আপিল করা হয়। বুধবার শুনানিতে ওইসব আপিল মঞ্জুর করে রায় ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই রায়ের ফলে তিনজন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা হারালেন। এছাড়া এদিন আপিলে ৪৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকিদের মধ্যে কল্যাণ পার্টির ১, তৃণমূল বিএনপির ৩, জাকের পার্টির ৪, জাতীয় পার্টির ২, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৩, মুক্তিজোটের ৬, ইসলামী ঐক্যজোটের ২, বিএনএফ’র ২, সাম্যবাদী দলের ১, বিএনএম’র ২, ইসলামী ফ্রন্টের ১ ও গণফ্রন্টের ১ জন রয়েছেন।
আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেও সুফল পাননি বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব আব্দুল মান্নান। তার প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে ইসি। নির্বাচনে তিনি বৈধ প্রার্থী হিসাবে গণ্য হচ্ছেন না। কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে তার প্রতিপক্ষ প্রার্থী মো. নাসিরুল ইসলাম খানের আপিল নামঞ্জুর হয়েছে। এর ফলে চুন্নুর প্রার্থিতা বহালই থাকছে। এছাড়া ফরিদপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের দায়ের করা আপিলের ওপর শুনানি হয়। এ শুনানি শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ কে আজাদ ও শামীম হক বিদেশি নাগরিক কি না সে বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৃথক চিঠি পাঠিয়েছে ইসি। একই দিন বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ড. শাম্মী আহমেদের বিদেশি নাগরিকত্বের বিষয়েও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন ভবনে কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার কমিশনার শুনানি করেন। ১০৩টি আপিলের শুনানি হয়। এর মধ্যে ৪৮টি আপিল মঞ্জুর, ৫৩টি নামঞ্জুর এবং দুটির আদেশ অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের (বাবুল) মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে আবেদন করেন সুকৃতি কুমার মন্ডল ও রণজিত কুমার রায়। ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ আনা হয়। শুনানিতে আপিল মঞ্জুর করা হয়। এর ফলে এনামুল হকের (বাবুল) প্রার্থিতা বাতিল হয়। সুনামগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান শামছুল আবেদীন ও পাবনা-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আজিজুল হক আরজুর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগে আপিল করেছিল অগ্রণী ব্যাংক। সে আপিল মঞ্জুর হয়। তাতে ওই দুই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
১৪ স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছে। তারা হলেন লালমনিরহাট-৩ আসনের মোহাম্মদ জাবেদ হোসেন, ফেনী-১ আবুল হাশেম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ বিজয় কুমার চৌধুরী, নীলফামারী-৩ মারজিয়া সুলতানা, জয়পুরহাট-২ মোহাম্মদ আতোয়ার রহমান মন্ডল, ঢাকা-১৪ মো. ইমরুল কায়েস খান, ঢাকা-১৮ এসএম তোফাজ্জল হোসেন, রাজবাড়ী-২ নূরে আলম সিদ্দিক, রংপুর-৬ তাকিয়া জাহান চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ-৩ রুবেল মিয়া, টাঙ্গাইল-৬ তারেক শামস খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ ফিরোজুর রহমান, বগুড়া-৩ অজয় কুমার সরকার ও ঢাকা-১৩ মো. শাহাবুদ্দিন। প্রার্থিতা ফেরত পাওয়া রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে-জাতীয় পার্টি ঢাকা-৩ মোহাম্মদ ফারুক ও ঢাকা-১৯ বাহাদুর ইসলাম। তৃণমূল বিএনপির ঢাকা-১৮ ড. মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, নেত্রকোনা-৪ মো. আল মামুন ও কুড়িগ্রাম-৪ মো. আতিকুর রহমান খান।