স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার উত্তর সীমান্তে রয়েছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য। এ রাজ্যের পাদদেশের সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে প্রতিরাতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে প্রায় টন দেশীয় শিং মাছ। আবার ভারত থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ডুকছে মদসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ অবৈধ পণ্য। দুই উপজেলার সীমান্ত দিয়ে প্রত্যেহ ১৫-২০টি সাদা পিকআপ ভর্তি দেশীয় শিং ও মাগুড় মাছ পাচার হচ্ছে দেদারসে।
দেশে এসব মাছের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও বেশি লাভের আসায় চোরাই পথে ভারতে যাচ্ছে মাছ। লাভের পরিমান বেশি হওয়ায় চোরাই পথে চোরা চালানের সংখ্যাও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অধিক মুনাফায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে সীমান্তের চোরাকারবারিরা। ফলে স্থানীয় হাটগুলোতে এসব মাছের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনির মদদে ভারতে যাচ্ছে এসব মাছ আর দেশে ডুকছে ভারতীয় অবৈধ পন্যের চালান। চোরাই পথে মাছের চালান ভারতে যাওয়ায় সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব । আর স্থানীয় পর্যায়ে দেখা দিয়েছে মাছের আকাল। বলা যায় চোরাকারবারিদের নিরাপদ রোড ছাতক-দোয়ারার উত্তর সীমান্ত বাংলাবাজার ও ভোগলা এলাকা।
জানা যায়, ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাবদা, শিং ও কই মাছ সহ চাঁদপুরের রুপালী ইলিশ রাতের আধারে ট্রাক যোগে চলে যায় বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাঁশতলা, শিমুলতলা ও কলাউড়া সীমান্তে। সেখানে ১২৩৬ নং পিলিয়ার সহ বোগলা ইউনিয়নের ইদুকোনা সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে পাচার হচ্ছে এসব মাছ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মৎস্য ব্যবসায়িরা জানান, এক ট্রাক মাছ পাচারে তারা ২০-২৫ হাজার টাকা ঘুস দেন। এছাড়া স্থানীয় হাট-বাজারে এসব মাছের পাইকারী দরের তুলনায় চোরাইপথে ভারতে পাঠালে প্রতি কেজিতে তিন’শ থেকে সাড়ে তিন’শ টাকা লাভ করা যায়।
ভারতে কৈ, শিং ও মাগুড় মাছের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। যে কারণে এইসব মাছ পাচার করে দ্বিগুন টাকা কামাচ্ছেন চোরাকারবারিরা। মাঝে মধ্যে চাঁদপুরের রুপালী ইলিশও চোরাইপথে ভারতে পাচার হয়ে থাকপ।
সূত্র জানায় বরফ দিয়ে ১০-১৫ কেজির প্যাকেট করা হয় পাবদা মাছের। শিং, মাগুর ও কই মাছ রাখা হয় পানিভর্তি বড় বড় ড্রামে। পরে প্রতি ট্রাকে ২৫ থেকে ৩০ মন মাছ বোঝাই করে স্থানীয় বাংলাবাজারের গোপন আড়তে মজুত করা হয়। রাতে সেখান থেকে এগুলো পৌঁছানো হয় সীমান্তের বিভিন্ন জিরো পয়েন্টে। ওখানে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকেন দুপারের শ্রমিকরা। সুযোগ বুঝে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ট্রাকে থাকা মাছের ড্রাম ও প্যাকেটগুলো ভারতীয় ট্রাকে স্থানান্তর করা হয়। এসব মাছ ব্যবসার সাথে জরিত থাকার কথা স্বীকার করে বাংলাবাজার এলাকার আনোয়ার,জিসান,রুস্তম ও ইব্রাহিম মোবাইল ফোনে জানান এসব মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন তারা। খবর নিয়ে জানা গেছে স্থানীয় বাজারে এসব মাছের কোনো নাম গন্ধ নেই। পাশাপাশি ছোট্ট এলাকায় প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার কেজি শিং মাছ বিক্রির সম্ভাবনাও নেই। প্রতিদিন মাছ বহনকারী প্রায় ১৫ জন ট্রাক চালক জানিয়েছেন তারা বাংলাবাজারে প্রতি রাতে মাছ পৌছে দেন। এছাড়া আর কিছু তাদের জানা নেই।
ছাতক-দোয়ারাবাজার (সার্কেল) সহকারী পুলিশ সুপার রণজয় চন্দ্র মল্লিক বলেন,এসব বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।