বিশেষ প্রতিনিধি:
গত পাঁচ বছরে সিলেট-৪ আসনের সংসদ-সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের স্ত্রী অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমদের সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। আর এই সময়ে ইমরান আহমদেরও সম্পদ বেড়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য জমা দেওয়া হলফনামা থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজের ও স্ত্রীর সম্পদের বিবরণে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা রয়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৬০ টাকা। আর এবারের হলফনামায় ইমরান আহমদ উল্লেখ করেছেন, স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৮৩ হাজার ৯ টাকা রয়েছে।
এই পাঁচ বছরে স্ত্রীর ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ইমরানের স্ত্রীর ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা মূল্যের একটি সুজুকি গাড়ি ছিল। এবার সেই গাড়ির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি হার্ড জিপ। ৫ বছর আগে ড. নাসরিন আহমদের কোনো কৃষিজমি ছিল না।
এবার হলফনামায় তার ৭৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৬০ টাকা মূল্যের ১০৫ শতক কৃষিজমির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণ, পাঁচ কাঠা অকৃষি জমি, ছয়তলা ভবনের ২৫ শতাংশ মালিকানার বিষয় উল্লেখ রয়েছে। এগুলো ৫ বছর আগেও ছিল।
উল্লেখ্য, ইমরান আহমদের স্ত্রী ড. নাসরিন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপ-উপাচার্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি বেগম বদরুন্নেসা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান।
এদিকে গত ৫ বছরে ইমরান আহমদেরও সম্পদ কিছুটা বেড়েছে। ২০১৮ সালের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার নামে ব্যাংকে জমা ছিল এক কোটি ৫৭ হাজার টাকা। এখন আছে এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মন্ত্রী থাকায় তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৮ টাকা, তবে ৫ বছরে তার স্থাবর সম্পত্তি অপরিবর্তিতই রয়েছে।
এবার হলফনামায় ইমরান আহমদ ব্যবসা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮০ টাকা। শেয়ার-সঞ্চয়পত্রে আমানত তিন লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা, চাকরি থেকে আয় ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ১৯৬ টাকা, ব্যাংক সুদ থেকে এক লাখ ৬১ হাজার ৪৭৫ টাকা পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নগদ ৩১ লাখ ৫৫ হাজার ১৯ টাকা রয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ এক কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৭ টাকা এবং ৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমান হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ইমরানের স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কৃষিজমি চার দশমিক ৪৭ একর ও চার দশমিক ৫ একর অকৃষিজমি। চা ও রাবার বাগান এবং নিজস্ব মৎস্য খামার রয়েছে ইমরান আহমদের।
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ইমরান আহমদ হলফনামায় আয়ের বিবরণ উল্লেখ করে যে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, এগুলো ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখা উচিত কমিশনের।
তবে সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেছেন, সব প্রার্থী মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা জমা দিয়েছেন। আমরা প্রাথমিকভাবে এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেছি। এ নিয়ে কারও কোনো আপত্তি আসেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে ফের যাচাই-বাছাই করে দেখা যেতে পারে।