বিশেষ প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর, হরিরামপুর ও সদর) আসনের এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের পাঁচ বছরে আয় ও সম্পদ দুটোই বেড়েছে। কমেছে ঋণের পরিমাণ। দেশের আদালতে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকলেও ভারতের কলকাতার হাইকোর্ট ও বহরমপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে আসামি তিনি। প্রতারণা শর্তভঙ্গ করা দুটি মামলার একটি সাক্ষীর জন্য আছে আরেকটি শুনানির পর্যায়ে আছে। এদিকে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনি হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও স্বামীর নাম পরিবর্তন হয়েছে। দ্বিতীয় স্বামী মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র রমজান আলীর নাম পরিবর্তন হয়ে নিজ হাসপাতালের ডাক্তার এএসএম মঈন হাসান নাম দিয়েছেন। ৫ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির পর এবার হলফনামায় লিখেছেন ৯ম শ্রেণি। পৃথক তিনটি সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১৪ সাল থেকে নিয়ে ৩য় বারের মতো নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন মমতাজ বেগম। নির্বাচন কমিশনে এবার জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরে তার আয় বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ২৭৬ টাকা। বর্তমানে আয় দেখানো হয়েছে ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। এর মধ্যে তার গান থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ৭ লাখ টাকা। বাকিটা কৃষি খাত থেকে ৩ লাখ, বাড়ি অ্যাপার্টমেন্ট অথবা দোকান ভাড়া থেকে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৭ টাকা এবং শেয়ার-সঞ্চয়পত্র অথবা ব্যাংক আমানত থেকে আসে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯১ টাকা।
এছাড়া সংসদ-সদস্য ভাতা ও আনুষঙ্গিক পারিতোষিক বাবদ মমতাজ বছরে আয় করেন ১৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসাবে তার হাতে আছে নগদ ৫ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৮ টাকা। মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ৩ কোটি ৫০ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার আছে তার। সঞ্চয়পত্র আছে ৪৫ লাখ টাকার। মমতাজ বেগমের নামে গাড়ি আছে তিনটি। গাড়িগুলোর দাম যথাক্রমে ১ কোটি ৩ লাখ ১২ হাজর ৫০০ টাকা, ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ২৮ লাখ টাকা। নির্ভরশীলদের নামে মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজের শেয়ার আছে ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার।
কৃষিজমি না বাড়লেও ৫ বছরে মমতাজের ৭০০ শতাংশ অকৃষি জমি কমেছে। ২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী তার অকৃষি জমি ছিল ১২০০ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০০ শতাংশে। মহাখালীতে ৫তলা ও সিংগাইরের জয়মণ্ডপ এলাকায় ২ তলা বাড়ি আছে তার-যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৫৭ লাখ ৫ হাজার ৪৪০ টাকা। মমতাজের স্বামীর নামে নগদ ৫ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৮ লাখ টাকা এবং ৮ লাখ টাকা দামের গাড়ি আছে।
এদিকে ২০১৩ সালের হলফনামায় দেখা গেছে, তখন তার বার্ষিক আয় ছিল ৭৯ লাখ ২৬ হাজারের বেশি। অন্যান্য খাতের আয় ছিল ৩৪ লাখ ৪১ হাজারের বেশি। অন্যান্য খাতের আয় একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনি হলফনামায় উল্লেখ করেননি তিনি।