বিশেষ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান এবার এই আসনে হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এখানে এবার নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল।
গত ১৫ বছরে বর্তমান এমপি মো. আব্দুল মজিদ খানের আয় ও সম্পদ সবই বেড়েছে। সব মিলে বেড়েছে ৫৪.২৬ গুণ। আর তার স্ত্রীর আয় ও সম্পদ সবই কমেছে। তার সম্পদ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ ভাগের ১ ভাগ। স্ত্রীর স্বর্ণ কমে হয়েছে ৩ ভাগের ১ ভাগ। কমেছে স্বর্ণের মূল্যও। ২০০৮ সালে স্ত্রীর ইলেকট্রনিক পণ্য, আসবাবপত্র থাকলেও এখন তার কিছুই নেই। স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি হিসাবে ছিল জমি। তাও এবার নেই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। আব্দুল মজিদ খানের ২০০৮ ও ২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে সম্পদের এসব তথ্য জানা গেছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেন, নিজের বাৎসরিক আয় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসাবে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ২ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পত্তি হিসাবে ছিল ৪ একর পৈতৃক কৃষি জমি (মূল্য উল্লেখ নেই), অকৃষি জমি সাড়ে ৬৫ শতাংশ, মূল্য ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭৫ টাকা, তিনটি আধা পাকা ঘর ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কোনো ধারদেনা ছিল না। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি মিলে তার ৮ লাখ ৬ হাজার ৭৭৫ টাকার সম্পত্তি ছিল। স্ত্রীর বার্ষিক আয় দেখানো হয় ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এছাড়া তার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ ৩০ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩ লাখ, ৩০ ভরি স্বর্ণ, ইলেকট্রনিকসামগ্রী ৪০ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্র ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। এছাড়া তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের কৃষি জমি। সব মিলিয়ে তার ১০ লাখ ১১ হাজার টাকার সম্পত্তি দেখানো হয়।
২০২৩ সালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলফনামায় দেওয়া তথ্যে জানা যায়, নিজের বাৎসরিক আয় ২০ লাখ ৪ হাজার ৮৬০ টাকা। কৃষি খাত থেকে ৪৫ হাজার, বাড়ি, এপার্টম্যান্ট, দোকান ভাড়া থেকে ৪ লাখ ৭ হাজার টাকা, মৎস্য খামার থেকে ১৫ লাখ, ব্যাংক আমানত থেকে ৫২ হাজার ২৫০ টাকা। এর বাইরে সংসদ-সদস্য হিসাবে প্রাপ্ত ভাতা (পরিমাণ উল্লেখ নেই)।
অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ২ কোটি ৭১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৩০ লাখ ২২ হাজার টাকা, মোটরগাড়ি ৯২ লাখ ৩০ হাজার, ইলেকট্রনিক পণ্য ৪০ হাজার, আসবাবপত্র ২০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমি ৩ একর (মূল্য ৩০ হাজার টাকা), অকৃষি জমি ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সব মিলে ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৭৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে নিজের সম্পদ। অর্থাৎ ২০০৮ সালের ৮ লাখ ৬ হাজার ৭৭৫ টাকার তুলনায় এখন তার সম্পদ ৫৪ গুণের বেশি বেড়েছে।
অন্যদিকে, তার স্ত্রীর আয় দাঁড়িয়েছে শূন্যের কোটায়। নগদ টাকা আছে ১ লাখ ৩০ হাজার এবং ১০ ভরি স্বর্ণ যার মূল্য ৪০ হাজার টাকা। সব মিলে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পত্তি নেই এক টাকারও। গত ১৫ বছরে তার সম্পদ কমে ৬ ভাগের ১ ভাগে দাঁড়িয়েছে। এবার তার ইলেকট্রিক পণ্য, আসবাবপত্র কিছুই নেই। স্বর্ণও কমে হয়েছে ৩ ভাগের ১ ভাগ। কমেছে স্বর্ণের দামও।