Sunday, November 24, 2024
Homeবিনোদনলাইফস্টাইলবেশি বয়সে বিয়ে করেন সিলেটের ছেলেমেয়েরা

বেশি বয়সে বিয়ে করেন সিলেটের ছেলেমেয়েরা

বিশেষ প্রতিনিধি:

সিলেটে ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৭ বছর আর মেয়েদের ক্ষেত্রে তা ২১ বছর। জাতীয় পর্যায়ে ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৫ বছর, মেয়েদের ১৯ বছর।

 

দেশে সবচেয়ে দেরিতে বিয়ে করেন সিলেট বিভাগের ছেলেমেয়েরা। এ বিভাগের ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৭ বছর; আর মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ২১ বছর ৪ মাস। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

দেশজুড়ে এ জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ১৫ থেকে ২১ জুন। একই বছর ২৭ জুলাই শুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আর গত ২৯ নভেম্বর জাতীয় প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে বিবিএস। তাতে দেখা যায়, দেশে এখন মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ।

 

 

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বেশির ভাগ বিদেশমুখী। তাই বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে এসে বিয়ে করতে তাঁদের সময় লাগে বেশি।

 

সর্বশেষ জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, দেশের আট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে বিয়ে হয় রাজশাহী বিভাগের মেয়েদের। এ বিভাগের মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন গড় বয়স ১৮ বছর ৬ মাস। কেন এ বিভাগের মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায়, তা জানতে চাওয়া হয় রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের তিনবারের চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলামের কাছে। তিনি সামাজিক বিষয়েও খোঁজখবর রাখেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সমাজে অনেক সচ্ছল পরিবারেও কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। সামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মানের কথা চিন্তা করে এ বিভাগের পরিবারগুলো মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে থাকতে পারে।’

 

জাতীয়ভাবেও দেরিতে বিয়ে করার প্রবণতা বাড়ছে। বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে পুরুষের বিয়ের গড় বয়স ২৫ বছর ৩ মাস; আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৯ বছর ৩ মাস। যদিও ২০২১ সালের বিবিএসের অন্য এক জরিপে বলা হয়েছিল, পুরুষের বিয়ের গড় বয়স ২৪ বছর ৪ মাস; আর মেয়েদের ক্ষেত্রে তা ১৮ বছর ৭ মাস। আইন অনুযায়ী, সরকারিভাবে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর।

 

জনশুমারির তথ্য বলছে, দেশে ১০ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রায় ২৯ শতাংশ বর্তমানে অবিবাহিত। আর বিবাহিত মোট জনগোষ্ঠী ৬৫ শতাংশ। বাকি জনগোষ্ঠী হয় বিধবা, নয়তো বিপত্নীক।

 

 

সিলেটের ছেলে ও মেয়েদের দেরিতে বিয়ে করার কারণ সম্পর্কে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এ অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা আগে অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে চান। বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়ের পরিবার দেখে, ছেলে কতটা প্রতিষ্ঠিত। তা ছাড়া এ অঞ্চলের মানুষ বেশির ভাগ বিদেশমুখী। তাই বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে এসে বিয়ে করতে তাঁদের সময় লাগে বেশি।

 

ব্যক্তিজীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতে সিলেটের ছেলেরা বেশি সময় নিলেও ময়মনসিংহের ছেলেরা বিয়েতে খুব বেশি দেরি করেন না। দেশে সবচেয়ে কম বয়সে বিয়ে করেন এ বিভাগের ছেলেরা। এ বিভাগের ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৪ বছর ১ মাস। ময়মনসিংহের ছেলেদের মতো কম বয়সে বিয়ে করেন রংপুর, রাজশাহী ও খুলনার ছেলেরাও। এই চার বিভাগের ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৪ বছর। এর বাইরে চট্টগ্রামের ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ২৬ বছর ও ঢাকায় তা ২৫ বছর ৬ মাস।

 

অন্যদিকে সিলেট ছাড়া অন্য সাতটি বিভাগে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছর। সিলেটে মেয়েদের বিয়ের বয়স ২১ বছরের বেশি।

 

বিভাগভেদে বিয়ের বয়সের নানা তারতম্য থাকলেও দেশে অবিবাহিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও একেবারে কম নয়। সর্বশেষ জনশুমারির তথ্য বলছে, দেশে ১০ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রায় ২৯ শতাংশ বর্তমানে অবিবাহিত। আর বিবাহিত মোট জনগোষ্ঠী ৬৫ শতাংশ। বাকি জনগোষ্ঠী হয় বিধবা, নয়তো বিপত্নীক।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments