বিশেষ প্রতিনিধি:
শুধু এক গ্লাস হালকা উষ্ণ পানি আর অর্ধেক লেবুর রস নিয়মিত পান করলে দেখবেন ফার্মেসীর ঠিকানা ভুলে গেছেন।
লেবু পানি পান করা শুরু করলে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না, সেই সঙ্গে মেলে অসাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
১. লিভারের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে-
লেবু পানি পান করলে লিভারের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। ফলে লিভারের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।
২. পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়-
লেবু পানিতে যে কেবল ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মজুত থাকে, তা নয়, সেই সঙ্গে থাকে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং আরও কত কী, যা দেহে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে শরীরকে শক্তপোক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. দেহের পি এইচ লেভেল ঠিক থাকে-
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লেবু পানি পান করলে দেহের পি এইচ লেভেলের ভারসাম্য ঠিক থাকে। ফলে ভেতর এবং বাইরে থেকে শরীর এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে-
প্রতিদিন লেবু পানি পান করা শুরু করলে দেহে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এত মাত্রায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
৫. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে-
হাজারো বিউটি প্রডাক্ট যা করে উঠতে পারেনি, তা লেবুর পানি নিমেষে করে ফেলতে পারে।
এই পানীয়তে বেশ কিছু উপাদান ত্বকের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে। সেই সঙ্গে ত্বকের বয়স কমানোর পাশাপাশি ব্ল্যাক হেডস এবং বলিরেখা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। গরমকালে ত্বককে ঠাণ্ডা এবং ঘামমুক্ত রাখতে লেবুর জল দিয়ে বারে বারে মুখটা ধুতে পারেন, দেখবেন উপকার পাবেন।
৬. ওজন হ্রাস পায়-
নিয়মিত লেবু পানি পান করলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্তি মেদ ঝরে যেতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ লেবুতে পেকটিন নামক একটি উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারে বারে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। কম মাত্রায় খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে কম মাত্রায় ক্য়ালরির প্রবেশ ঘটে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগই পায় না।
৭. এনার্জির ঘাটতি দূর হয়-
ঘুম থেকে উঠে চা বা কফি না খেয়ে প্রতিদিন এক গ্লাস করে লেবুর পানি পান করার চেষ্টা করুন। দেখবেন শরীর চনমনে হয়ে উটতে সময়ই লাগবে না। লেবুতে থাকা একাধিক উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে সকাল সকাল শরীর এবং মস্তিষ্ক চাঙ্গা হয়ে উঠতে একেবারেই সময় লাগে না।
৮. শ্বাস কষ্টের মতো সমস্যা কমে-
যারা এ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টে ভোগেন তারা খেয়ে দেখুন কেমন ফল পান!
এই পানীয়টি শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত একাধির জটিলতাকে কমিয়ে ফেলতে দারুন কাজে আসে।
৯. স্ট্রেস এবং অবসাদের থেকে মুক্তি মেলে-
নিয়মিত লেবুর পানি পান করলে স্ট্রেস একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে অবসাদের প্রকোপও কমে। লেবু পানিতে বেশ কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে এমন সব সমস্যা নিমেষে কমে যেতে শুরু করে।
১০. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে-
লেবু পানিতে থাকে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম, যা রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন সকাল-বিকাল লেবু পানি পান করা শুরু করুন, দেখবেন দারুন ফল পাবেন। তবে এমনটা করার আগে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না যেন।
১১. পেটের স্বাস্থ্যের প্রকোপ কমে-
যারা বদ হজম, কনস্টিপেশন, বারংবার পেট খারাপ সহ নানাবিধ পেটের রোগে ভুগে থাকেন তারা প্রতিদিন সকালে গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করবে। ফলে রোগের প্রকোপ তো কমবেই, সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিনও বেরিয়ে যাবে।
১২. মুখ গহ্বরের নানা রোগ নিমেষে সেরে যায়-
মুখ থেকে খুব দুর্গন্ধ বের হয়? আজ থেকেই লেবু পানি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন বদ গন্ধ একেবারে কমে যাবে। শুধু তাই নয়, মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং দাঁতে যন্ত্রণা হওয়ার মতো সমস্যা হলেও এই ঘরোয়া পদ্ধতিটিকে কাজে লাগাতে পারেন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন।
১৩. সংক্রমণের প্রকোপ কমে-
লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ। তাই তো লেবু পানি যে কোনও ধরনের সংক্রমণ, বিশেষত গলার সংক্রমণ কমাতে দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে লেবু পানি দিয়ে গার্গেল করলেই উপকার পাওয়া যায়।