শীতে ঠোঁটের সুরক্ষায়
বিশেষ প্রতিনিধি।
শীতের দিনে ঠোঁট ফাটা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান অনেকে। এমন অবস্থায় কী করবেন পরামর্শ দিয়েছেন রেড বিউটি স্যালনের রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।
হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এর প্রভাব দেখা দিচ্ছে আমাদের ত্বকে।
শীতে সবার আগে সবচেয়ে বেশি কাবু হয় ঠোঁট। চামড়া ওঠা, ফাটল ধরা, বিবর্ণ হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এ জন্য আগেভাগেই ঠোঁটের যত্ন শুরু করা দরকার। শুধু যে শীতের প্রভাবেই ঠোঁট ফাটে, তা নয়।
অনেক সময় শরীরে পানিশূন্যতার জন্যও ঠোঁট শুকিয়ে যায়। শীতে অনেকে পানি কম পান করে, তার ওপর বাতাসের আর্দ্রতাও কমে যায়। দুইয়ের প্রভাবে ঠোঁটের রুক্ষতা বেড়ে যায়।
ঠোঁট সব সময় আর্দ্র রাখার চেষ্টা করতে হবে।
লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন। অনেকেই ঠোঁটে ফাটল ধরার পর যত্ন শুরু করে। সবচেয়ে ভালো হয় ঠোঁট ফাটার আগে থেকেই ব্যবহার শুরু করা। এতে ঠোঁট ফাটার আর অবকাশ থাকবে না। ঠোঁট ভেজাতে অনেকেই জিব ব্যবহার করে।
এতে উল্টো ঠোঁট আরো বেশি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে ওঠে। এ জন্য পেট্রোলিয়াম জেলি বা লিপজেল ব্যবহার করতে হবে। নিজের কাছে একটি লিপবাম রেখে দিন, যেন ঠোঁট শুকালেই ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ঠোঁটে লিপজেল লাগান।
শীতের রুক্ষতায় বাতাসে ধুলাবালির পরিমাণ বাড়ে। ঠোঁটের তেলজাতীয় লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলিতে এসব ধুলাবালি সহজেই আটকে যায়। এতে অনেক সময় ঠোঁটে সংক্রমণ হতে পারে। বাইরে থেকে ফিরেই পাতলা কাপড় ভিজিয়ে আলতো করে ঠোঁট পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর লিপজেল লাগাতে হবে।
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ঠোঁটে লিপজেল লাগান
ঠোঁটের সুরক্ষায় ঘরোয়া যত্নআত্তিও উপকার বয়ে আনবে। ঘরোয়া উপায়ে ঠোঁটের প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। এসব প্যাক ব্যবহারে ঠোঁট সতেজ ও সুন্দর রাখা যায়। সপ্তাহে এক দিন এক চা চামচ করে মধু ও চিনি মিশিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর ভেজা কাপড় দিয়ে আস্তে আস্তে ঘষে তুলে ফেলুন। ঠোঁটের মরা চামড়া দূর হবে। ঠোঁট কোমল ও মসৃণ হবে। মরা চামড়া দূর করতে আধা চা চামচ লেবুর রস ও সামান্য চিনি একসঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে দু-তিন মিনিট স্ক্রাব করুন। এরপর ভেজা ন্যাকড়া দিয়ে আলতো করে ঘষে তুলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দু-তিন দিন এই স্ক্রাব ব্যবহার করলে ঠোঁট উজ্জ্বল ও কোমল থাকবে। ঠোঁট যদি বেশি শুকিয়ে যায়, তবে এক চা চামচ অলিভ অয়েলে সামান্য পেট্রোলিয়াম জেলি মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। ঠোঁট আর্দ্র থাকবে।
অতিরিক্ত শীতে অনেকের ঠোঁট কালচে হয়ে পড়ে। অনেকের ঠোঁটের স্বাভাবিক রং হারিয়ে বিবর্ণ হতে দেখা যায়। এ জন্য গোসলের পর ঠোঁটে গোলাপজল ও মধু মিশিয়ে লাগাতে পারেন। ঠোঁটে গোলাপি আভা ফুটে উঠবে। ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে কাঁচা দুধ ও চালের গুঁড়া মিশিয়ে ১০ মিনিট ঘষুন। সপ্তাহে দু-তিনবার ব্যবহার করুন। ঠোঁটের স্বাভাবিক রং ফিরে আসবে।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে। শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে শাক-সবজি, তাজা ফলমূল ও ফলের রস, ডাবের পানি, জুস পান করতে পারেন। এতে শীতেও ঠোঁট সতেজ, কোমল ও সুরক্ষিত থাকবে।