খেলাধুলা প্রতিদিন।
মাত্র এক ম্যাচের জন্য জরুরি বার্তা পেয়ে ওপেনার এনামুল হক বিজয় ভারতে গেলেন। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বিকল্প হিসেবে বিশ্বকাপে ডাক পান তিনি। কাউকে বিকল্প হিসেবে নিয়ে আসা বা স্কোয়াডে যোগ করা মানেই যে তাকে একাদশে খেলাতে হবে, এমন নয় অবশ্যই। তবে প্রশ্নটিও উঠে যায় অবশ্যই, তা হলে এই শেষ ম্যাচটির আগে এনামুলকে আনা জরুরি ছিল কেন?
প্রশ্নটি আরও বেশি জোরালো হয়, সাকিবের বদলি হিসেবে এনামুলকে আনা হয়েছে বলে।
কোনো ক্রিকেটার চোটের কারণে ছিটকে গেলে তার জায়গায় এমনিতে বদলি কাউকে নেওয়াই রীতি। তবে খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ না হলে স্রেফ একটি ম্যাচের জন্য বদলি অনেক সময় নেওয়া হয় না, বিশেষ করে দল দেশের বাইরে থাকলে। তার পরও যখন সাকিবের বদলি হিসেবে এনামুলকে নেওয়া হলো, একজন অলরাউন্ডারের বদলে আনা হলো টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে, সে ক্ষেত্রে এই বার্তা পাওয়াই স্বাভাবিক যে এই ব্যাটসম্যানকে দলের একান্ত প্রয়োজন!
সেই প্রয়োজনীয়তার কথা দলের বাইরের অনেকে অনুভব করছিলেন আসলে বিশ্বকাপের আগে থেকেই। ১৫ জনের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে কোনো বিকল্প টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান ছিল না। লিটন কুমার দাসের সঙ্গে অনভিজ্ঞ তানজিদ হাসানকে মূল ওপেনার হিসেবে বড় ভরসা রাখা হয়েছে। পরে প্রমাণিত হয়েছে, সেই ভরসা আসলে ছিল তার জন্য প্রবল চাপ।
শুধু ওপেনিংই নয়, গোটা স্কোয়াডেই বাড়তি বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান ছিল না। দলকে সেজন্য ভুগতেও হয়েছে বেশ। ম্যাচের পর ম্যাচ তানজিদ ব্যর্থ হলেও তাকে খেলানো হয়েছে অনেকটা বাধ্য হয়েই।
বাড়তি ব্যাটসম্যানের প্রয়োজনীয়তার কথা বিশ্বকাপজুড়েই অস্বীকার করে গেছে দল। বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে যারা এসেছেন, তারা প্রতিবারই বলেছেন এই কথা। এমনকি অধিনায়ক সাকিব তার শেষ সংবাদ সম্মেলনেও বলেছেন, ব্যাটসম্যানদের ওপর তাদের এতটাই বিশ্বাস ছিল যে বিকল্প ব্যাটসম্যান রাখার কথা তারা ভাবেননি।
পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে দুই দিন নেটে ব্যাটিং করলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে হয়তো পানি-তোয়ালে টানবেন। প্রয়োজনে ২-১ ওভার ফিল্ডিং করবেন। এর পর অন্যদের সঙ্গে বাড়ির পথ ধরবেন।
২০১৫ বিশ্বকাপে দলের তৃতীয় ম্যাচে ফিল্ডিংয়ে চোট পেয়ে ছিটকে পড়েন। এর পর ২০১৯ বিশ্বকাপে আর সুযোগ পাননি। এবারও স্কোয়াডে ছিলেন না। আর কখনো বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কিনা, সেই সংশয় ছিল। কিন্তু অনেকটা আচমকাই সুযোগ হয়েছিল তার বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে নতুন অধ্যায় যোগ হওয়ার। শেষ পর্যন্ত তা হলো না। এবারের বিশ্বকাপের শেষের যাত্রী হয়ে এসে অনেকটা দর্শক হয়েই রইলেন এনামুল।