ডেইলি স্পোর্টস:
তামিম ইকবাল বিশ্বকাপে খেলবেন না বলে ঘোষণা দেওয়ার পরই আবিষ্কার করা হলো হাতে আছে আরেক ‘তামিম’। তানজিদ হাসান তামিম– একে তো বাঁহাতি, তার ওপর আবার রাগীমেজাজে ব্যাট চালাতে পারেন। শিক্ষক খালেদ মাহমুদ সুজনেরও সার্টিফিকেট ছিল। সব মিলিয়ে তাঁকেই একরকম ধরেবেঁধে মুকুট পরিয়ে রাজকুমার বানিয়ে দেওয়া হলো!
রাজ্যজুড়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে শিরোনাম হলো– তামিমের বিকল্প মিলেছে আরেক তামিম। অতি উৎসাহে কেউ কেউ বলে বসলেন, এই ছেলেই হবে ২০০৭ সালের সেই তামিম! ঘটনাক্রম ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩। কাট টু– ৩১ অক্টোবর, ২০২৩। স্থান– কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে শূন্য রানে সেই রাজকুমার আউট।
শুধু এই একটি ম্যাচ নয়, বিশ্বকাপে তার সাত ইনিংস স্কোর যোগ করলে দাঁড়ায়– ১১৫। রীতিমতো আন্ডারকুকড অবস্থাতেই এই তানজিদকে বিশ্বকাপে পাঠানো হয়েছে। বিশ্বকাপের আগে চারটি ওডিআই’তে যার রান ৩৫। তামিম ইকবাল শেষ মুহূর্তে সরে যাওয়ায় তানজিদকে বেঞ্চ থেকে সামনে আনা হয়েছে, এই যুক্তি দেখালেও প্রশ্ন থাকে– ওপেনিংয়ে ব্যাকআপ কেন নেই। এক লিটন দাস আর তানজিদ তামিম! এসব প্রশ্ন উঠতেই বিসিবির নীতিনির্ধারকরা মেহেদী মিরাজকে ব্যাকআপ খাঁড়া করে দেন।
দল ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল, ইমার্জিং এশিয়া কাপে ভালো করছেন তানজিদ তামিম। বাড়তি কারিকুলাম হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের কথা বলা হয়েছিল। এখন নিশ্চয়ই ম্যানেজমেন্ট বুঝতে পেরেছেন, ইমার্জিং এশিয়া কাপে তিনটি ফিফটি করা তানজিদ সেখানে শাহিন আফ্রিদিদের মুখোমুখি হননি। প্রাথমিক স্কুলের ভালো ছাত্রটিকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার দায়টা কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারবেন না নির্বাচকরা।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পেসার টপলির লেন্থ বলে উইকেট দিয়েছেন তানজিদ, নেদারল্যান্ডসের পেসার ফানভিককেও খেলতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ১৪৪ কিলোমিটার গতির শট বলে আউট হয়েছেন। এই মানের বোলিংয়ের সামনে কখনও দাঁড়ানোরই অভিজ্ঞতা যাঁর নেই, তাঁর ওপরই কিনা ভরসা (পড়তে পারেন বাজি ধরেছেন) করেছেন নির্বাচকরা।
অবশ্য শুরুর তামিম ইকবালের সঙ্গে তানজিদের তুলনা কেউ কেউ এখনও করতে পারেন। তামিম তাঁর প্রথম বিশ্বকাপে করেছিলেন ১৭২ রান। হাতে দুই ম্যাচ থাকায় তানজিদেরও ওই রান করার সুযোগ আছে। তামিম তাঁর চার বিশ্বকাপে ছয়টি হাফসেঞ্চুরি করেছেন। নতুন তামিম একটি ফিফটি তুলে নিয়েছেন। তানজিদ তাঁর প্রথম ১২ ওডিআই ম্যাচে ১৩৪ রান করেছেন। তামিম করেছিলেন ২২২ রান। সেখানে আবার বারমুডা, কানাডা, জিম্বাবুয়ের সঙ্গেই ছিল আট ম্যাচ। তাই এই তামিমও একদিন হতে পারেন সেই তামিম।