Sunday, November 24, 2024
Homeইসলামসুস্থতা আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত, এবং সুস্থতাই অমূল্য সম্পদ

সুস্থতা আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত, এবং সুস্থতাই অমূল্য সম্পদ

 

ইসলামী জীবনঃ

 

সুস্থতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় নিয়ামত। এই নিয়ামতের কদর অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত অনুধাবন করা যায় না। কোনো রোগ এমন আছে, যেগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মানুষ সারা জীবনের অর্জিত সব সম্পত্তি দিয়ে দিতে রাজি, কিন্তু পৃথিবীর সব কিছু দিয়েও তারা এক চিলতে সুখ কিনে নিতে পারে না। কখনো কখনো সাধারণ রোগব্যাধিও এতটা যন্ত্রণাদায়ক হয়, রোগীর কাছে মনে হতে থাকে এই মুহূর্তে এই রোগটা থেকে মুক্ত হওয়া তার কাছে বিশ্বজয়ের চেয়ে বড় হবে।

 

 

এ জন্যই প্রিয় নবীজি (সা.) সুস্থতার নিয়ামতের মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘এমন দুটি নিয়ামত আছে, যে দুটিতে বেশির ভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হচ্ছে, সুস্থতা আর অবসর।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪১২)

খুশুখুজুর সঙ্গে ইবাদত করার জন্যও সুস্থতা প্রয়োজন।

 

 

একজন অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা একজন ব্যস্ত ব্যক্তি চাইলে শতভাগ মনোযোগ দিয়ে ইবাদত করতে পারে না। তাই অসুস্থতা আসার আগে মানুষের উচিত, সুস্থতার মূল্যায়ন করা এবং সঠিকভাবে ইবাদত ও হালাল উপার্জনের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ অর্জন করা। বিশ্বনবী (সা.) রোগাক্রান্ত হওয়ার আগে সুস্থতা বিরাট সম্পদ হিসেবে গণ্য করার নসিহত করেছেন। আমর ইবনে মায়মুন আল আওদি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে নসিহতস্বরূপ বলেন—‘পাঁচটি জিনিস আসার আগে পাঁচটি কাজকে বিরাট সম্পদ মনে করো।

১. তোমার বার্ধক্যের আগে যৌবন, ২. রোগগ্রস্ত হওয়ার আগে সুস্বাস্থ্য, ৩. দরিদ্রতার আগে অভাবমুক্ত থাকা, ৪. ব্যস্ততার আগে অবসর সময় এবং ৫. মৃত্যুর আগে জীবন।’ (শুআবুল ঈমান)

পৃথিবীতে যে ঈমানদার সুস্থ আছে, তার পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদে দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা আছে, বলা যায়, সে দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ লাভ করেছে। এটা বিশ্বনবী (সা.)-এর ভাষ্য। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে লোক পরিবার-পরিজনসহ নিরাপদে সকালে উপনীত হয়, সুস্থ শরীরে দিনাতিপাত করে এবং তার কাছে সারা দিনের খোরাকি থাকে, তাহলে তার জন্য যেন গোটা দুনিয়াটাই একত্রিত করা হলো।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৬)

 

নবী (সা.)-এর এই হাদিস পড়ার পর ফিলিস্তিনবাসীর কথা মনে পড়ে যায়।

 

তাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই, পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানি নেই, ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে, আত্মীয়-স্বজন হারিয়ে গেছে।

উল্লিখিত হাদিসে যে বিষয়গুলোকে বিরাট নিয়ামত হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, সেগুলো যে বাস্তবেই কত বড় নিয়ামত তা ফিলিস্তিনবাসী হয়তো ভালোভাবে টের পাচ্ছে না। এই পৃথিবীতে মানুষ আল্লাহর রহমত ছাড়া বড় অসহায়। বড়ই দুর্বল। কখন মানুষকে কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে, তা তারা নিজেরাও জানে না। তাই মানুষের উচিত, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করা, আল্লাহর বিধানগুলো মেনে চলা। আল্লাহর দেওয়া জান-মাল ও সুস্থতার মূল্যায়ন করা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments