Sunday, November 24, 2024
Homeইসলামঅন্যান্য ধর্মগ্রন্থে নবী করিম সা: আগমনী বার্তা

অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে নবী করিম সা: আগমনী বার্তা

 

ইসলামী জীবন ব্যবস্থা:

সৃষ্টিজগতের সূচনা থেকে মহাজগৎ নবীজি (সা.)-এর আগমনের অপেক্ষায় ছিল। আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সব নবীর কাছ থেকে তাঁর আনুগত্যের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দান করেছি, অতঃপর তোমাদের কাছে যা আছে তার সমর্থক স্বরূপ যখন একজন রাসুল আসবেন, তখন তোমরা তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, তোমরা কি স্বীকার করলে? এবং এ সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার গ্রহণ করলে? তারা বলল, আমরা স্বীকার করলাম।

 

 

তিনি বললেন, তবে তোমরা সাক্ষী থাকো এবং আমিও তোমাদের সঙ্গে সাক্ষী থাকলাম।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮১)

মহানবী (সা.) অন্য কোনো নবীর সমসাময়িক ছিলেন না। তার পরও এই অঙ্গীকার গ্রহণের অর্থ হলো, তাঁরা যেন তাঁদের অনুসারীদের এই নবীর আগমনের সুসংবাদ এবং আনুগত্যের নির্দেশ দেন। ফলে পৃথিবীর প্রধান প্রধান ধর্মগ্রন্থে মহানবী (সা.)-এর বিবরণ এসেছে।

 

 

যেমন—

১. তাওরাত : মুসা (আ.) তাঁর অনুসারীদের বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক ও ইলাহ আমার মতো একজন নবী প্রেরণ করবেন ইবরাহিম (আ.)-এর বংশধর তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকে।’ (আল মারজাউ ফি সিরাতুন-নাবাবিয়্যা, পৃষ্ঠা ৬৬)

 

তিনি মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা জানিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয়ই তিনি সিনা পর্বত থেকে আত্মপ্রকাশ করেন, তাদের জাহান্নাম থেকে বের করে এনেছেন, ফারান পর্বতে আরোহণ করেন, তাঁর সঙ্গে ১০ হাজার পবিত্র সঙ্গী। তাঁর ডান পাশ থেকে প্রজ্বলিত হলো তাদের শরিয়তের আগুন।’ (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা ৬৫)

 

২. ইনজিল : বাইবেলে মহানবী (সা.)-কে ‘ফারাক্লিত’ নামে অভিহিত করা হয়েছে।

 

সুরয়ানি এই শব্দের অর্থ প্রশংসিত। ঈসা (আ.) মহানবী (সা.)-এর ব্যাপারে বলেন, ‘তোমাদেরকে বলার আমার আরো অনেক কথা আছে। কিন্তু তোমরা এখন তা সহ্য করতে পারবে না। যখন সেই সত্য-আত্মা আসবেন, তখন তিনি তোমাদেরকে সত্যের সন্ধান দেবেন। তিনি নিজ থেকে কিছু বলবেন না।

যা যা শুনবেন তা-ই বলবেন এবং ভবিষ্যতের ঘটনাও জানাবেন।’ (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা ৬৮)

৩. দিঘা-নিকায়া : সাইয়েদ মানাজির আহসান গিলানি (রহ.) বলেন, গৌতম বুদ্ধ আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখ করে গৌতম বুদ্ধ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ শিষ্য নন্দের ভাষ্যে উল্লেখ করেছেন, ‘হে আমার মুনিব! আপনি চলে যাওয়ার পর দুনিয়াকে কোন শিক্ষা দেব?’ গৌতম বুদ্ধ তার উত্তরে বললেন, ‘নন্দ! আমি দুনিয়ায় আগত প্রথম বৌদ্ধও নই এবং শেষ বৌদ্ধও নই। যথাসময়ে দুনিয়ায় আরেকজন বৌদ্ধ আসবেন। তিনি হবেন পবিত্র ও আলোকিত অন্তরের অধিকারী। তাঁর কাজগুলো হবে বুদ্ধিদীপ্ত। যিনি অনিবার্য বাস্তবতায় প্রকাশ পাবেন।’ (আন-নাবিয়্যুল খাতিম, পৃষ্ঠা ৩০)

 

৪. বেদ-পুরাণ : কোনো কোনো ঐতিহাসিক দাবি করেছেন, বেদ, পুরাণ ও উপনিষদ ভবিষ্যতে ‘কল্কি অবতার’ আগমনের যে ভবিষ্যদ্বাণী এসেছে, তার উদ্দেশ্য মুহাম্মদ (সা.)। তাঁরা দাবি করেন, প্রাচীন এই ধর্মগ্রন্থগুলোতে ‘আল্লাহ’, ‘রাসুল’ ও ‘মুহাম্মদ’ শব্দগুলোও রয়েছে। যেমন—ভাগবত পুরাণের ১২ খণ্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ে ১৮-২০ শ্লোকে বলা হয়েছে, ‘বিষ্ণুয়াস নামের একজন যে মহৎ হৃদয়ের ব্রাহ্মণ এবং সাম্বালা নামের একটি গ্রামের প্রধান, তাঁর ঘরে জন্মাবেন কল্কি।’ এখানে বলা হয়েছে, কল্কির বাবার নাম বিষ্ণুয়াস। ‘বিষ্ণু’ কথার অর্থ ঈশ্বর এবং ‘ইয়াস’ কথার অর্থ দাস। অর্থাৎ ঈশ্বরের দাস, যার আরবি অর্থ আবদুল্লাহ। এটা রাসুল (সা.)-এর বাবার নাম। কল্কির জন্ম সাম্বালা গ্রামে। সাম্বালা শব্দের অর্থ প্রশান্ত। রাসুল (সা.)-এর জন্মভূমি মক্কাকে দারুল আমান বা শান্তির জায়গা বলা হয়। মহানবী (সা.) মক্কার নেতৃস্থানীয় পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments