শাহ সুমন,(বানিয়াচং) প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে অতি-ভারি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল আমন ধান সহ নানান জাতের শাত-সবজির জমি। উপজেলার বেশির ভাগ পরিবার কৃষির উপর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
ধান, ভুট্টা সহ নানান জাতের শাক-সবজি চাষাবাদ করা ফসলের অন্যতম। কম খরচে চাষাবাদ হওয়ায় আমন ধান কৃষকের বড় স্বপ্নের ফসল। হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বিস্তীর্ণ হাওর এলাকা জুড়ে চাষ হয়েছে সোনলী আমন ধান। কৃষকের স্বপ্নের সেই ফসল আমন ধান মধ্য বয়সী হতেই ভারি বৃষ্টির পানিতে ডুবেছে।
এক নাগালে ভারি বৃষ্টি হওয়ার কারনে, এবং পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে আমন ক্ষেতের পানি যেন নামছে না। ফলে টানা ২/৩ দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে ক্ষেতের ধান চাড়া, ভুট্টা সহ নানান জাতের শাক-সবজি ফসল। দীর্ঘ সময় পানিতে ডুবে থাকলে একেবারে পচে নষ্ট হয়ে যাবে কৃষকের স্বপ্নের ফসল। উপজেলার অধিকাংশ আমন ক্ষেত এখন পর্যন্ত পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে।
কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, শুধু আমার আমন ক্ষেত নয়, পুরো এলাকার সবার ক্ষেত আজ ৩ দিন ধরে ডুবে আছে। কিন্তু এরই মধ্যে আমন ধান গাছ পচে নষ্ট হচ্ছে। কের প্রতি জমিতে প্রতিবছর ১৪/১৫ মণ করে ধান পাই। আমন চাষে সেচ খরচ নেই। তাই ফলন কম হলেও বেশ লাভ হয়। তবে এবার উৎপাদন খরচ তো দূরের কথা বাড়িতে চিড়া মুড়ি খাওয়ার মতোও ধান আসবে না।
কৃষক আনোয়ার মিয়া খুব আক্ষেপ করে বলেন, আমার আট(৮) কের আমন ধানি জমির সব গুলো পানিতে ডুবে গেছে, যা নতুন করে রোপন করার আর কোনো সুযোগ নাই। বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে আমন ধান ক্ষেত। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা খুবই কম। তাই নদীতে পানি নামছে খুবই ধীর গতিতে। ফলে আমন ধানগাছ পচে নষ্ট হচ্ছে।
বানিয়াচং উপজেলা কৃষিবিদ কৃষি অফিসার মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, বানিয়াচং উপজেলার প্রায় এক হাজার সত্তর (১০৭০) হেক্টর আমন ধানি ফসলি জমি ও পঞ্চাশ (৫০) হেক্টর সবজি জমি আক্রন্ত হয়েছে। নষ্ট হওয়া ক্ষেতে নতুন করে আমন রোপণ করার সুযোগ নেই। তাই এসব জমিতে আগাম ভুট্টাসহ সবজি চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সিলেট বিভাগের সচিব মহোদয়ের সেমিনারে বানিয়াচং উপজেলার কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির জন্য পুর্ণবাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি, এবং যে সব এলাকায় পানি নিষ্কাশনের অভাবে ক্ষেত ডুবে আছে। সেই সব এলাকায় কৃষি অফিসাররা তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।