দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব মাছিমপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন এর পরিবার তীব্র আর্থিক সংকটে পড়ে স্থানীয় মাঝেরগাও গ্রামের নুরুল ইসলাম এর পুত্র দাদন ব্যবসায়ী আপ্তাব উদ্দিনের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়েছিলেন, আনোয়ার হোসেন (৪৮)। ঋণের চাপ ও টেনশনে আনোয়ার হোসেন এর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পূর্বে আনোয়ার হোসেন প্রতি মাসে ৪,০০০ হাজার করে, ৪০.০০০ হাজার টাকার সুদ, ৩ লাখ টাকা দেওয়ার পরও সুদ মুক্ত হয়নি আনোয়ার হোসেন। সুদ থেকে মুক্তি না পাওয়ায় মৃত আনোয়ার হোসেন এর স্ত্রী মোছাঃ শহিদা বেগম
শনিবার (৪ অক্টোবর) দোয়ারাবাজার থানায় দাদন ব্যবসায়ী আপ্তাব উদ্দিন এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র ও অভিযোগে জানা যায়, বিগত ৩ বছর পূর্বে আমার স্বামী আনোয়ার হোসেন টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায়, আপ্তাব উদ্দিন এর নিকট হইতে নগদ ৪০,০০০ হাজার টাকা হাওলাত ধার নেন। আমরা গরীব লোক হওয়ায় আপ্তাব উদ্দিন এর দেওয়া ৪০ হাজার টাকা সময় মত ফেরত না দিতে পারায় দাদন ব্যবসায়ী আপ্তাব উদ্দিন কৌশলে একশো টাকা মূল্যের ২ টা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়। ৪০ হাজার টাকার সুদ হিসেবে প্রতি মাসে ৪,০০০/- টাকা দাবী করে। আমরা তখন থেকে আপ্তাব উদ্দিনকে প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা করে চক্রবৃদ্ধি সুদ ৩ বছর দিয়ে আসছি। ৩ বছরে সুদ হিসেবে ৩,১৮,০০০ টাকা নেওয়ার পরও আরও টাকা দাবি করে রাস্তা ঘাটে আমার ছেলেদের সাথে খারাপ আচরণ ও গালিগালাজ করে। এছাড়াও গত ০১/১০/২০২৫ইং তারিখ বুধবার আপ্তাব উদ্দিন আমার ছেলে আব্দুল্লাহ-কে দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজ সংলগ্ন মংলারগাও গ্রামের যাতায়াত
রাস্তার উপর পাইয়া সুদের টাকা দেওয়ার জন্য অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ এর ফাঁকে আপ্তাব উদ্দিন শাঁসাইয়া হুমকি দিয়ে বলে দাবীকৃত সুদের টাকা না দিলে মারপিট করবে।
আনোয়ার হোসেন স্ত্রী শহিদা বেগম বলেন আপ্তাব উদ্দিন এর সুদের টাকার টেনশনে আমার স্বামী আনোয়ার হোসেন এর মৃত্যু হয়। ৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা সুদ নেওয়ার পরও ও আপ্তাব উদ্দিন আমাদের স্বাক্ষরিত ২ টি স্টাম্প ফেরত না দিয়ে আমার অবুঝ ছেলেদেরকে রাস্তাঘাটে মারার কুটকৌশল করে আসছে। আমি দেশবাসী সহ প্রশাসনের নিকট বিচার প্রার্থী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, আপ্তাব উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে এলাকার দরিদ্র মানুষদের অর্থকষ্টের সুযোগ নিয়ে উচ্চ সুদে ঋণ দিয়ে আসছেন। কোনো লিখিত চুক্তি না থাকলেও বিভিন্নভাবে চাপে ফেলে দেনাদারদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন। এসব দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় এমন অবৈধ লেনদেন ব্যবসা দিন দিন বাড়ছে। দাদনের ফাঁদে পড়ে একের পর এক পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে আপ্তাব উদ্দিনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ও তাকে পাওয়া যায়নি।
দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, এবিষয়ে একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।