Wednesday, September 10, 2025
Homeইসলামইসলামে দুপুর বেলা বিশ্রামের গুরুত্ব

ইসলামে দুপুর বেলা বিশ্রামের গুরুত্ব

ধর্ম ও জীবন,

দুপুরের ঘুমকে অলসতা বলে মনে করেন অনেকে। খুব বেশি ক্লান্ত বা অসুস্থ হলে মানুষ দুপুরে ঘুমান, এমনটাই ধারণা অনেকের। ব্যস্ত জীবনে অনেকেরই সুযোগ হয় না দুপুরে ঘুমানোর। তবে যারা বাড়িতে থাকার সুযোগ পান, দুপুরের খাবারের পরে কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে নেওয়া তাদের কাছে বেশ আরামের। এই ঘুম রাতের ঘুমের মতো দীর্ঘ হয় না। এই ঘুম কি উপকারী না অপকারী তা নিয়ে নানাজনের নানা ধারণা।

গবেষণায় দেখা গেছে, ষাট কিংবা এর আশেপাশে যাদের বয়স তাদের জন্য দুপুরে অন্তত দুই ঘণ্টা ঘুম খুবই দরকারি। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য বেশি ভালো থাকবে। ষাটের ওপরে যাদের বয়স, তাদের মধ্যে যারা দুপুরে ঘুমান এবং যারা ঘুমান না তাদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, দুপুরে যারা ঘুমান তারা মানসিকভাবে বেশি সুস্থ। অপরদিকে দুপুরে না ঘুমানো ব্যক্তিরা ভুগছেন নানা অসুস্থতায়।

 

মহানবী (সা.)-এর যুগেও এই ঘুমের প্রচলন ছিল। আমাদের নবীজি (সা.) দুপুর বেলা কাইলুলা করতেন। রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা দুপুরে বিশ্রাম নাও। কেননা শয়তান দুপুরে বিশ্রাম নেয় না। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সহিহাহ, হাদিস : ১৬৪৭; সহিহুল জামে, হাদিস : ৪৪৩১)

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুপুরের ঘুম সম্পর্কে উম্মু সুলায়ম (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) তাঁর কাছে আসতেন এবং বিশ্রাম নিতেন, উম্মু সুলায়ম তাঁর জন্য একটা চামড়ার বিছানা বিছিয়ে দিলে তিনি তার ওপর কাইলুলা করতেন। তিনি প্রচণ্ড ঘামতেন আর উম্মু সুলাইম তা একত্র করতেন এবং সুগন্ধির বোতলে তা মিশিয়ে রাখতেন। নবী (সা.) বলেন, হে উম্মু সুলায়ম, এ কী করছ? তিনি বলেন, আপনার ঘাম, আমি সেটা সুগন্ধির সঙ্গে মিশিয়ে রাখি। (মুসলিম, হাদিস : ৫৯৫১)

 

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুপুরের ঘুম সম্পর্কে আরেক হাদিসে এসেছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উম্মু সুলাইমের বোন উম্মু হারাম বিনতু মিলকান (রা.) বলেন, একদা রাসুল (সা.) তাদের কাছে দুপুরে বিশ্রাম নিলেন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে ঘুম থেকে জেগে উঠলেন।

 

উম্মু হারাম (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আপনার হাসির কারণ কী? তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম, (আমার উম্মতের) কিছু লোক এই সাগর পাড়ি দিচ্ছে। যেন তারা রাজার মতো সিংহাসনে বসে আছে। উম্মু হারাম বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আমার জন্য দোয়া করুন, যেন আমি তাদের দলভুক্ত হই। তিনি বলেন, তুমি তাদের দলভুক্ত হবে।

 

উম্মু হারাম বলেন, তিনি আবারও ঘুমালেন এবং হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি হাসলেন কেন? তিনি আবারও একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আমার জন্য দোয়া করুন, যেন আল্লাহ আমাকে তাদের দলভুক্ত করেন। তিনি বলেন, তুমি তাদের প্রথম দলে থাকবে।

 

আনাস (রা.) বলেন, পরবর্তী সময়ে উবাদাহ ইবনুস সামিত (রা.) তাকে বিবাহ করেন। অতঃপর তিনি নৌ-যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং উম্মু হারামকেও সঙ্গে নেন। যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তনকালে উম্মু হারামকে একটি খচ্চর বাহন হিসেবে দেওয়া হয়। খচ্চরটিতে আরোহণ করলে সেটা তাকে পিঠ থেকে ফেলে দেওয়ায় তার ঘাড় ভেঙে যায়, ফলে তিনি মারা যান। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৯০)

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments