Sunday, August 24, 2025
Homeলিড সংবাদসিলেট-বান্দরবানের ১৭ পাথর কোয়ারিতে টেকসই ইকো-ট্যুরিজম করতে আদালতের নির্দেশ

সিলেট-বান্দরবানের ১৭ পাথর কোয়ারিতে টেকসই ইকো-ট্যুরিজম করতে আদালতের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক,

সিলেট ও বান্দরবানের ১৭টি পাথর কোয়ারিতে পরিবেশবান্ধব টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগ। জায়গাগুলোর মধ্যে সিলেট জেলার ৭টি (জাফলং, শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি এবং লোভাছড়া) এবং বান্দরবান জেলার ১০টি ঝিরি-ছড়া রয়েছে।

 

আজ রোববার বিচারপতি কাজী জিনাত হক এবং বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ এই আদেশ দেন। জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

 

এ সময় আদালত বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অসাংবিধানিক, অবৈধ ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। রুলে পাথর কোয়ারিগুলোকে কেন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা এবং পরিবেশবান্ধব টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে রক্ষা ও ব্যবস্থাপনার নির্দেশ প্রদান করা হবে না তাও জানতে চান আদালত।

 

এ ছাড়া অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের, পাথর উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব নিরূপণের এবং প্রকৃত দোষীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ প্রদান করা হবে না–তাও জানতে চান আদালত। রুল জারির পাশাপাশি আদালত পাথর কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলন, সংগ্রহ ও অপসারণের কার্যক্রম যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে প্রশাসনকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

 

আদালত খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার এবং সিলেট ও বান্দরবনের জেলা প্রশাসককে আগামী ৩ মাসের মধ্যে পরিবেশবান্ধব ইকো-ট্যুরিজম বিকাশের জন্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে সিলেট জেলার ৭টি পাথর কোয়ারিসহ সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে পাথর উত্তোলনে জড়িতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত ও প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রস্তুত ও আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।

 

এ বিষয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে গত বছরের আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত পাথর কোয়ারিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণ বিষয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের ৫১টি এলাকাকে পাথরসমৃদ্ধ অঞ্চল ঘোষণা করে। পরিবেশগত ক্ষতির কারণে ২০২০ সালে সব কোয়ারি থেকে উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে ২০২৫ সালে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হলে সিলেট ও অন্যান্য এলাকায় নির্বিচারে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। এ অবস্থায় বেলা রিট দায়ের করে।

 

মামলায় বিবাদী ছিলেন ভূমি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, পরিবেশ, স্বরাষ্ট্র, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিবগণ; পরিবেশ অধিদপ্তর, খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট ও বান্দরবনের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।

 

বেলার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী। তাঁকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহা. এরশাদুল বারী খন্দকার।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments