Sunday, August 24, 2025
Homeশিক্ষাশাবিতে ‘জীববৈচিত্র্য রক্ষায়’ আকাশমণি কেটে নতুন গাছ লাগাচ্ছে প্রশাসন

শাবিতে ‘জীববৈচিত্র্য রক্ষায়’ আকাশমণি কেটে নতুন গাছ লাগাচ্ছে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক,

 

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শতাধিক আকাশমণি গাছ কাটা হচ্ছে।

 

প্রশাসনের দাবি, এসব গাছ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করছে। তাই বিক্রি করে সেখানে ফুল, ফল ও ওষুধি গাছ রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্কেটবল মাঠের পশ্চিম পাশে এসব গাছ কাটা শুরু হয়।

 

তবে সিলেট বন বিভাগের টাউন রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ বলছেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ কাটার বিষয়ে তারা অবহিত নন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখা জানায়, গত জুনে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১০৭টি গাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। এসব গাছে মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ আকাশমণি এবং বাকি পাঁচ শতাংশ কদম ও কাঁঠালসহ কিছু গাছ রয়েছে যেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। এসব গাছ দেড় লাখ টাকা নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্কেটবল মাঠের পশ্চিম পাশে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক বাস্কেটবল মাঠ সংলগ্ন শিল্প ও উৎপাদন প্রকৈাশল বিভাগের ওয়ার্কশপের পেছনে ‘বড় বড়’ আকাশমণি গাছ কাটছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার প্রধান কর্মকর্তা অধ্যাপক মো. আবুল হাসনাত বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাসে প্রচুর আকাশমণি গাছ রয়েছে। এসব গাছের কারণে ক্যাম্পাসে পাখিরাও আসে না। তাছাড়া এসব গাছ ছায়া ছাড়া পরিবেশে বড় কোন ইতিবাচক প্রভাব রাখে না। বরং দেখা যায় এসব গাছের কারণে ক্যাম্পাসের টিলাগুলোতে বারবার আগুন লেগে যায়”

 

“আমরা ক্যাম্পাসে গাছ লাগানোর জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় তিন লাখ টাকার অনুদান পেয়েছি। এসব অনুদানে ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন ফুল, ফল ও ওষুধি গাছসহ প্রায় সাড়ে সাত হাজার গাছ লাগিয়েছি। সামনে আরও লাগাব।”

 

তিনি বলেন, “এসব গাছ লাগানোর জন্য তো আমাদের জায়গা তৈরি করতে হবে। সেজন্য ক্যাম্পাস আঙ্গিনার আশপাশের যেসব জায়গায় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছ আছে, সেগুলো আমরা কাটতেছি। শিক্ষার্থীদের ও ক্যাম্পাসের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই আমরা এসব গাছ কাটতেছি।”

 

“ক্যাম্পাসের গাজীকালু টিলাসহ প্রায় বেশিরভাগ জায়গায় আকাশমণি গাছ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলে সেগুলোও আমরা কেটে ফেলব।” যোগ করেন আবুল হাসনাত।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান মোল্লা বলেন, “প্রশাসন গাছ কাটার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে মিটিং করেছে।

 

“ওই মিটিংয়ে প্রশাসন এসব গাছের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে এবং বলে যে, গাছগুলো কেটে সেখানে বিভিন্ন ফুল, ফল ও ওষুধি জাতীয় গাছ লাগাবে। আমরা এতে ইতিবাচক সাড়া দেই।”

 

শাবির বন ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক স্বপন কুমার সরকার বলেন, “দেশে বন পরিবেশ ও বন প্রাণীর আবাসস্থল বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ না লাগানোর জন্য বলা হয়েছে। তবে আমার জানা মতে, এসব গাছের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে গভীরভাবে বাংলাদেশে গবেষণা হয় নাই। হয়তো ভবিষ্যতে হবে।”

 

তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন টিলাগুলো একসময় ফাঁকা ছিল। এসব টিলাগুলোতে তেমন কোন গাছ হতো না। যেহেতু আকাশমণি গাছের অভিযোজন ক্ষমতা ভাল, শুষ্ক জায়গায়তে সহজে বড় হতে পারে-সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আকাশমণি গাছগুলো লাগিয়েছিল।”

 

সিলেট বন বিভাগের টাউন রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ বলেন,“বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গাছ কাটার বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments