নিজস্ব প্রতিবেদক,
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে ছাত্রদল ও যুবদল নেতার বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত আজমিরীগঞ্জ পৌরসদর বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিএনপির অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি আজমিরীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রিক্ত করিমকে জামিন করাতে বাদী ইবজল মিয়াকে আজমিরীগঞ্জ চৌকি আদালতে নিয়ে যান আজিমনগর গ্রামের বাসিন্দা কুতুব মিয়ার ছেলে পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ আহমেদ।
এ নিয়ে পৌরসভার নগর গ্রামের বাসিন্দা রশিদ মিয়ার পুত্র আজমিরীগঞ্জ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও বর্তমানে পৌর যুবদল নেতা ফকরুল ইসলামের সাথে মারুফ আহমদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ বিষয় নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় মারুফের পক্ষের কয়েকজন ফকরুলের বিরুদ্ধে পৌর সদরে মিছিল দেয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে প্রথমে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ইট পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। টানা প্রায় চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।
পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ আহমেদ বলেন, এক আসামির জামিন করানোকে কেন্দ্র করে আদালতে ফকরুল ইসলাম আমার ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় ফকরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আজমিরীগঞ্জ সদরে আমি একটি মিছিল বের করি। এ সময় ফকরুল ও তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। এরপরেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পৌর যুবদল নেতা ফকরুল ইসলাম বলেন, আজমিরীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রিক্ত করিম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আমাদের বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে। এ মামলায় বর্তমানে সে কারাগারে আছে। সম্প্রতি পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাকে জামিন করানোর চেষ্টা করে। সোমবার মামলার বাদী ইবজল মিয়াকে জোরপূর্বক মারুফ আহমেদ আদালতে নিয়ে যায়। এ সময় আমি তাতে বাধা দেই । এর জের ধরে মারুফ আহমেদের লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিছিল বের করে। তখন আমরা পাল্টা মিছিল বের করলে সংঘর্ষ হয়।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামছুল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী মামলার আসামিকে জামিন করানোর চেষ্টাকে কেন্দ্র করে যুবদল নেতা ফকরুল ইসলাম ও ছাত্রদল নেতা নেতা মারুফ আহমেদের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা এ বিষয়টি দেখছি।
এ বিষয়ে বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ বলেন, এক আসামির জামিন নিয়ে দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডা থেকে সন্ধ্যায় সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।