ইসলাম প্রতিদিন,
আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। শান্তির ধর্ম ইসলাম ধর্মালম্বী মানুষের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই ঈদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর হয়ে আসছে।
শনিবার (৭ জুন) সকালে মুসল্লিরা কাছাকাছি ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। পরে খতিব নামাজের খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। সাধারণত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
পরে ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সারাদেশে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে দিনটিতে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তবে ঈদের পরের দু’দিনও পশু কোরবানি করার সুযোগ আছে। আগামী সোমবার আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত কোরবানি করা যাবে। সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব। কোরবানির পশুর মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ বিলিয়ে দিতে হয় গরিব-মিসকিনকে। আত্মীয়দের দিতে হবে এক ভাগ।
প্রসঙ্গত, ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, চার হাজার বছর আগে মুসলমানদের আদি পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হন সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করার। আল্লাহ তাআলা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে তার প্রিয় বস্তু কোরবানি করার নির্দেশ দেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা।
এরপর হজরত ইব্রাহিম তার প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দেওয়ার জন্য নিয়ে যান। এর মাধ্যমে তিনি আল্লাহর প্রতি সর্বোচ্চ আনুগত্য প্রদর্শন করেন। এ সময় আল্লাহর নির্দেশে ইসমাইলের বদলে সেখানে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই হজরত ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে।
তবে ঈদুল আজহার সঙ্গে পবিত্র হজের সম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় হিজরি মাস গণনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার মক্কার অদূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায় হজ পালন করেছেন। সকালে মুজদালিফা থেকে ফিরে হাজিরা মিনায় অবস্থান করে পশু কোরবানিসহ হজের অন্য কার্যাদি সম্পাদন করেছেন। পরের দিন শুক্রবার সৌদি আরবসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। এমনকি সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের বেশ কিছু স্থানেও ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে।