নিজস্ব প্রতিবেদক,
তিন দিনের টানা ভারী বর্ষণে বন্যার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে সিলেট অঞ্চলে। এরইমধ্যে গোয়াইনঘাট-রাধানগরের সড়কসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয় ১৩২ মিলিমিটার। অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে নদীর পানি। প্রতিটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে সবার আগে।
শনিবার সকাল থেকে গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের কিছু অংশের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করে। এতে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। লোকজন পানি ডিঙিয়ে যাতায়াত করছে। এ উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও বিছনাকান্দি তলিয়ে গেছে পানিতে। পাশের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীতে পানি বাড়ার কারণে সেখানকার পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর ডুবে গেছে।
উপজেলা পর্যায় থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, সেখানকার বিভিন্ন এলাকায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। প্লাবিত হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। নদ-নদীর পানি বাড়ছে উল্লেখ করে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাঁধন কান্তি সরকার জানিয়েছেন, আপাতত বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা নেই। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বন্যার আশঙ্কার আগাম বার্তা দিয়েছে।
পাউবোর তথ্য মতে, সিলেটের সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে শুক্রবার ১০ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও শনিবার বিকেলে ১১ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়; যা বিপৎসীমার (১২ দশমিক ৭৫) এক দশমিক শূন্য ৯ দশমিক নিচে। একই নদীর সিলেট পয়েন্টে শুক্রবার ৭ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার হলেও শনিবার বিকেলে ৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
একইভাবে কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ, ফেঞ্চুগঞ্জ, কুশিয়ারা ও শেওলা পয়েন্টে ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক শূন্য ৫ পর্যন্ত পানি বেড়েছে। একইভাবে লোভা, সারি, গোয়াইন, ধলাইসহ অন্যান্য নদীর পানিও বাড়ছে।
সিলেটের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেট অঞ্চলে শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয় ১৫৬ মিলিমিটার। আজও সিলেটে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে পানি বাড়ছে। সারি, গোয়াইন ও ধলাই নদীর পানি বেশি বেড়েছে। তবে এখনও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে পানি লোকালয়েও প্রবেশ করবে।