নিজস্ব প্রতিবেদক,
সিলেটে রাজনৈতিক আলোচনায় রয়েছেন সম্প্রতি দেশে ফেরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী সিলেটের মেয়ে ডা. জুবাইদা রহমান। নগরীর বিভিন্ন দেয়ালে ‘ডা. জোবাইদা রহমানকে সাংসদ হিসাবে দেখতে চাই’ এমন লেখা পোস্টারকে কেন্দ্র করে হঠাৎ সিলেটের রাজনৈতিক আলোচনায় তার নাম আসে। অনেকে বলছেন, সিলেটের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। তবে বিএনপি নেতারা বলেছেন, এটি বেনামি পোস্টার। বিষয়টি সম্পর্কে তাদের জানা নেই।
গত মঙ্গলবার রাত ১১টার পর হঠাৎ নগরীতে দেখা মেলে ডা. জোবাইদা রহমানের ছবি সংবলিত পোস্টার। এতে জোবাইদা রহমান ছাড়াও জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি আছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশের অহংকার সিলেটবাসীর গর্ব ডা. জোবাইদা রহমানকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের সংসদীয় আসন সিলেট-১ এর সাংসদ হিসেবে, আমরা অবহেলিত, বঞ্চিত সিলেটবাসী আমাদের অভিভাবক হিসেবে দেখতে চাই’। নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, লামাবাজার, শাহি ঈদগাহ, সোবহানীঘাট, সুবিদবাজার, আম্বরখানা, চৌহাট্টা, উপশহরসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে এ পোস্টার।
এদিকে, সিলেট-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তারা এই আসনে নির্বাচন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছেন । এ অবস্থায় পোস্টার দেখে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। কারা হঠাৎ এসব পোস্টার সাঁটাল, তাদের খুঁজতে থাকেন বিএনপির লোকজন। এখানে নির্বাচন করার জন্য মুক্তাদির ও আরিফুলের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে। অনেকের ধারণা, সিলেট বিএনপিতে বিভক্তি থাকায় জিয়া পরিবারের বাইরে কেউ এ আসনে নির্বাচন করলে পরাজয়ের আশঙ্কা আছে।
আরিফুল হক সম্প্রতি লন্ডন সফরে যান। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন। অন্যদিকে, মুক্তাদির যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র দাবি করেছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে লন্ডন যাবেন। সেখানে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করবেন।
ডা. জোবাইদার পোস্টার নগরীজুড়ে সাঁটানোর পর অনেকেই ফেসবুকে তাঁকে সিলেটের অভিভাবক হিসেবে আখ্যায়িত করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, ডা. জোবাইদা সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করলে ঐক্যবদ্ধ হবে সিলেটের বিএনপি।
এদিকে আরিফুল হক চৌধুরী লন্ডন থেকে আসার পর নিজ বাসায় নেতাকর্মীকে বলেন, ‘তারেক রহমান সিলেটের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আগামী নির্বাচনে দলকে সিলেটের ১৯ আসন উপহার দিতে চাই। এ জন্য সিলেটের একজন অভিভাবক দরকার। আমি নেতার কাছে দাবি করেছি, এমন একজন নেতা দরকার, যাকে ঘিরে সিলেটে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হবে এবং সিলেট বিভাগের মানুষ আশার আলো দেখবে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য তারেক রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কাউকে সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছি। এতে সিলেটবাসীর ১৭ বছরের বঞ্চনার অবসান হবে।’
পোস্টার প্রসঙ্গে নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী গণমাধ্যমে বলেন, ডা. জোবাইদা রহমান সিলেটের কৃতীসন্তান। তাঁর রাজনীতিতে আসা, নির্বাচন করা অথবা সিলেট-১ আসন চাওয়াটা কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু পরিচয়বিহীন পোস্টার লাগিয়ে তাঁকে প্রার্থী করার দাবি জানানোর প্রক্রিয়াটি অস্পষ্ট। নগরীজুড়ে সাঁটানো পোস্টারগুলো বেনামি।