গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি:::
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিমসহ দলের শীর্ষ নেতাদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। যদিও এসব নেতা গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য এসব নেতার বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়েছেন। বিকেল পর্যন্ত চলে এ অভিযান। তবে এসব অভিযানে কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ বলছে, দলীয় আলোচিত নেতা চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন মামলার আসামি আটক, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের অংশ হিসেবে এ অভিযানে যায় পুলিশ। পুলিশি বহর নিয়ে নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি অবস্থান ও অভিযানে স্থানীয় প্রতিবেশীদের মাঝে উৎকণ্ঠা বিরাজ করে। উৎসুক জনতাকেও অভিযানের সময় নেতা-কর্মীদের বাড়ির সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডিবি পুলিশের দুটি গাড়ি ও পুলিশের চারটি গাড়িসহ মোট ছয়টি গাড়ি নিয়ে প্রথমে উপজেলার হাজীপুরে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিমের বাড়িতে যান পুলিশ সদস্যরা। যদিও বাড়িটি ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুস্থানের দিন বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর করে। এরপর শাহীন চাকলাদার ও তার পরিবারের সদস্যরা কেউ আর বাড়িতে থাকেন না। ভাঙা এই বাড়িতে সংস্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা কথা বলে চলে যান। এরপর পুলিশের টিমটি সদর এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমানের বাসায় যায়। সেখান থেকে এলাকার চৌঘরী মোকাম মহল্লায় অবস্থিত জেলা যুবলীগ নেতা মাহমুদুল আমিনের বাড়িতে যায়। সেখানে পুলিশ সদস্যরা জুয়েলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টিমটি পৌর শহরের ফুলবাড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী ফখর, দাড়িপাতনের পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌরসভার সাবেক আমিনুল ইসলাম রাবেল ও উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পৌর কাউন্সিলর রুহিন আহমদ খানের বাড়িতে যান। এসব বাড়িতে অভিযানে কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
যুবলীগ নেতা মাহমুদুল আমিনের বাবা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বাসায় পুলিশ আসে, এসে মাহমুদুলের খোঁজ খবর নেয়। আমরা বলি, মাহমুদুল অনেক আগে থেকেই বাড়িতে নেই, সে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে থেকেই দেশের বাইরে।আমাদের বলে তাকে দেশের যেকোনো জায়গায় থাকলে অচিরেই গ্রেফতার করব, তারপর পুলিশ চলে যায়।
অভিযানে থাকা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের বাড়িতে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা ও বিভিন্ন মামলার আসামিরা অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল দেওয়ার পায়তারা করছে। আওয়ামী লীগ যুবলীগের নেতারা তাদের মদদ দিচ্ছে ও বিদেশে পলাতক নেতারা তাদের টাকা পয়সা দিয়ে নিজ বাড়িতে লুকিয়ে রেখে সময় সুযোগে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই শান্তিশৃঙ্খলা বজায় এর অংশ হিসেবে অভিযানে যায় পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করা যায়নি। কিন্তু তাদের পরিবারের সদস্যদের কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছে পুলিশ।