সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি,
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী এইচ এ উলুম সিনিয়র আলিম মাদরাসার দুই ছাত্রীকে যাওয়া-আসার পথে স্থানীয় ৫ বখাটে যুবকের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। বখাটেদের উৎপাতে মাদরাসায় যেতে ভয় পাচ্ছে উত্ত্যক্তের শিকার ৭ম ও ৮ম শ্রেণির ওই দুই ছাত্রী। উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটেদের মারপিটে গুরুতর আহত হয়েছেন এক ছাত্রীর চাচা। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
সম্প্রতি তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পুরান বারুংকা গ্রামের মুচি বাড়ির সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, এ ঘটনায় ২৮ এপ্রিল সোমবার পাঁচ যুবকের বিরূদ্ধে তাহিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর আহত ওই চাচা ও মাদরাসার অধ্যক্ষ।
অভিযুক্তরা হলেন, বালিজুরী গ্রামের নয়া হাটির মহিবুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), মুজিবুর রহমানের ছেলে হিমেল (২২), আলমগীরের ছেলে মারুফ মিয়া (২১), জাহাঙ্গীরের ছেলে তৌফিক মিয়া (২২) ও হাবিব মিয়ার ছেলে রকি (২৩)।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল রোববার মাদরাসার ক্লাস শেষে বিকেলে বাড়ি ফিরছিলেন ছাত্র-ছাত্রীরা। পথে পুরান বারুংকা গ্রামের দুই ছাত্রীর পথ আগলে দাঁড়ায় ৫ বখাটে যুবক এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাদের উত্ত্যক্ত করতে থাকে। খবর পেয়ে এক ছাত্রীর চাচা এগিয়ে গিয়ে বখাটেদের আচরণের প্রতিবাদ করলে তার ওপর হামলা চালায় এবং মারপিট করে। বখাটেদের মারপিটে আহত হন ছাত্রীর চাচা। বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
থানায় অভিযোগকারী ছাত্রীর আরেক চাচা বললেন, বখাটেদের প্রতিবাদ করে আমার ভাই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মেয়েরা এখন মাদরাসায় যেতেও ভয় পাচ্ছে। পরের দিন আমরা নিজেরা নিয়ে গিয়েছিলাম। থানায় অভিযোগ করেছি, আমরা চাই এদের কঠোর শাস্তি হোক। যাতে ছাত্রীরা নিরাপদে মাদরাসায় আসা-যাওয়া করতে পারে।
বালিজুরী গ্রামের বাসিন্দা মো. ফেরদৌস আলম বলেন, মাদরাসার ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ জরুরি সভায় বসবেন সবাই। আমরা চাই, তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠিন শাস্তি হোক। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন আচরণ করার সাহস না পায়।
বালিজুরী এইচ এ উলুম সিনিয়র আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. হারিছ উদ্দিন বলেন, ২৭ এপ্রিল বিকেলে মাদরাসা থেকে ছাত্রীরা বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটেছে। পরদিন তারা আমাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রেজুলেশন করে আমরা মাদরাসা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এলাকার লোকজনও চাচ্ছেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বালিজুরী মাদরাসার দুই ছাত্রীকে রাস্তায় উত্ত্যক্ত ও এক ছাত্রীর চাচাকে মারধরের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।