মতিউর রহমান গোয়াইনঘাট (সিলেট):
হাওর বাওর বেষ্টিত চির সবুজের গ্রাম সতী, এ গ্রামের প্রধান অর্থনীতি কৃষি। বোরো ধানের সোনালী ফসল এনে দেয় গ্রামের মানুষ কে সুখ, শান্তি আর সমৃদ্ধি। গ্রামটির অবস্থান, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৪নং লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের অধিভুক্ত গ্রাম এই গ্রামটির নাম সতী।
রাস্তাঘাট, শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে পড়া এ গ্রামটি সময়ের সাথে সাথে আনুপাতিক হারে উর্ধ্বগতি লাভ করছে। এ গ্রামে নেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নেই তেমস সরকারি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা। নেই ইউপি চেয়ারম্যান কিংবা বা মেম্বার, প্রশাসক দিয়ে চলছে নাগরিক সেবা।
বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত সতি গ্রামবাসী,নিজের ভাগ্য উন্নয়নে নিজেরাই তৎপর হয়েছে।
এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সতী গ্রামবাসী, নিজস্ব অর্থায়নে খাল খননের মাধ্যমে দু-পারে ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করেছেন, যার ব্যয় ৬০ লক্ষ টাকার উপরে। একটি খালের দুপারে দুটি রাস্তার মধ্য দিয়ে হাওরের সাথে গ্রামের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।একই সাথে নৌকা ও গাড়ি দিয়ে যাওয়া যাবে হাওরে।
এতে করে সহজে ধান ঘরে তোলা সম্ভব হবে। গ্রামের মানুষের দাবি এই প্রকল্পের মাধ্যমে কমপক্ষে একই সাথে ২০ টি সেবা পাওয়া যাবে। খালের দুপারে গাছ- গাছালির মাধ্যম সবুজের সমারোহ গ্রামটিকে করবে দৃষ্টি নন্দন, পানিতে মাছ চাষ, খালের পানি দিয়ে চাষ হবে শত শত বিঘা জমি। হাওরের মাঠে গরু চরানো, বন্যার পানি প্রবাহ, বন্যা রোধ, পর্যটন বোর্ডের আওতায় ওয়াকওয়ে, সহ নানাবিধ সুবিধা পাবে গ্রামের মানুষ। সুবিধা পাচ্ছে আশপাশের মৌজার লোকজন, এতে করে মিটবে ফসলের চাহিদা, গোছাবে খাদ্য ঘাঠতি। দেশ হবে সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর। কৃষক গোলা ভরে তোলবে ধান, যা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
আর মাত্র কিছু দিন পর সোনালী ফসল ঘরে তোলার কাজে নিয়োজিত হবে দুই থেকে আড়াই হাজার কৃষক। কিন্তু বর্তমান আবহাওয়া অনুযায়ী বোরো মৌসুমে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর এবং হাওর এলাকায় এর পরিমাণ খুবই বেশি। প্রতিবছর বজ্রপাতের কারণে হাওর এলাকায় প্রাণ হারান গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষক। তাদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে হাওরের বিভিন্ন জায়গায় ৩-৪ টি কৃষক ছাওনি নির্মাণ করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
গ্রামবাসীর দাবি সরকারী অর্থায়নে রাস্তাটি আরসিসি ঢালাই প্রয়োজন ।।