ধর্ম ও জীবন ::
বছরের দুই ঈদ, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ একই ধরনের ও নিয়মের। ঈদের নামাজ দুই রাকাত এবং তা ওয়াজিব। ঈদের নামাজে আজান-ইকামত নেই। যাদের ওপর জুমার নামাজ ওয়াজিব, তাদের ওপর ঈদের নামাজও ওয়াজিব।
ঈদের নামাজ ময়দানে পড়া উত্তম। তবে মক্কাবাসীর জন্য মসজিদে হারামে উত্তম। শহরের মসজিদগুলোতেও ঈদের নামাজ জায়েজ আছে।
ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবির ওয়াজিব। প্রথম রাকাতে তাকবিরে তাহরিমা ও ‘ছানা’র পর তিন তাকবির। দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের পর রুকুতে যাওয়ার আগে তিন তাকবির। এ তাকবিরগুলো বলার সময় ইমাম-মুকতাদি সবাইকে হাত উঠাতে হবে। তৃতীয় তাকবির ছাড়া প্রত্যেক তাকবিরের পর হাত ছেড়ে দিতে হবে।
জামাতের সঙ্গে ঈমামের পেছনে ঈদের নামাজ পড়তে হবে। কোনো কারণে কোনো ব্যক্তির ঈদের নামাজ ছুটে গেলে এই নামাজের কাজার বিধান নেই। তাই কারো ঈদের নামাজ ছুটে গেলে সে আশপাশের অন্য কোনো ঈদের জামাতে শরীক হওয়ার চেষ্টা করবে। এমনটি সম্ভব না হলে তওবা-ইস্তেগফার করবে। যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে যেন কোনোভাবে ঈদের নামাজ ছুটে না যায়। শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/১৬১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৯৮; আলহাবীল কুদসী ১/২৪৪
ঈদের দিনে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই সুন্নত ও মুস্তাহাব। সেগুলো হলো-
১. মেসওয়াক করা সুন্নত।
২. গোসল করা সুন্নত।
৩. সুগন্ধি ব্যবহার করা সুন্নত।
৪. কিছু খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত। বিজোড় সংখ্যায় যেকোনো মিষ্টিদ্রব্য খাওয়া উত্তম; খেজুর অতি উত্তম।
৫. ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া উত্তম। এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া অন্য রাস্তা দিয়ে আসা মোস্তাহাব।
৬. ঈদগাহে যাওয়ার পথে নিচু স্বরে তাকবির (আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ) পড়া সুন্নত।
৭. সাধ্যমতো উত্তম পোশাক পরিধান করা মোস্তাহাব।
৮. নামাজের জন্য ঈদগাহে যাওয়ার আগে সাদকায়ে ফিতর আদায় করা সুন্নত। (দাতা ও গ্রহীতার সুবিধার্থে রমজানেও প্রদান করা যায়)।
৯. ঈদের দিন চেহারায় খুশির ভাব প্রকাশ করা ও কারও সঙ্গে দেখা হলে হাসিমুখে কথা বলা মোস্তাহাব।
১০. আনন্দ-অভিবাদন বিনিময় করা মোস্তাহাব। (ফাতাওয়া শামি : ১/৫৫৬,৫৫৭,৫৫৮)