ধর্ম ও জীবন বিধান::
মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ‘সদকাতুল ফিতর’, যার অর্থ হচ্ছে ‘ঈদ-উল-ফিতরের সদকা’। বাংলাদেশে এটি ‘ফিতরা’ হিসেব অধিক পরিচিত। ইসলাম ধর্মে এটি ‘যাকাত-আল-ফিতর’ হিসেবেও পরিচিত।
মহানবী (স.) এই ‘ফিতরা’ নারী-পুরুষ এবং ছোট-বড় সবার জন্য নির্বিশেষে বাধ্যতামূলক করেছেন।
ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, রোজা পালনের সময় কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটে থাকলে তা সংশোধন এবং সমাজের দরিদ্র মানুষ যাতে ভালোভাবে উৎসবে অংশ নিতে পারে সেজন্য এই ‘ফিতরার’ বিধান রাখা হয়েছে।
ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বেই ফিতরা দিয়ে দেয়া উত্তম। অবশ্য নামাযের পূর্বে দিতে না পারলে পরে দিলেও চলবে। তবে সওয়াব কম হবে। তাছাড়া রমজানে দিলেও আদায় হবে। তবে ঈদের দিনের পর বিলম্ব করা মাকরূহ। (বুখারি ১৫০৩)
সদকাতুল ফিতর সম্পর্কে সমাজে প্রচলিত ভুল-ভ্রান্তি,
সদকাতুল ফিতর মুসলিম উম্মাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা রমজানুল মুবারকের শেষে ঈদুল ফিতরের দিন আদায় করতে হয়। এটি জাকাতেরই একটি প্রকার। রসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস শরীফে তা আদায়ের তাকীদ করেছেন এবং এর নিয়ম-নীতি শিক্ষা দিয়েছেন।
এ কারণেই নবী যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ ইসলামের পাঁচ রোকন ও দ্বীনের অন্যান্য মৌলিক আমল ও ইবাদতের মতো সদাকাতুল ফিতরও নিয়মিত আদায় করে আসছে। আমাদের এ অঞ্চলে তা ‘ফিতরা’ নামেই সমধিক পরিচিত।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র সুন্নাহর আলোকে এই সাদাকার বিস্তারিত আহকাম ও বিধান ফিকহের কিতাবে সংকলিত হয়েছে। সদকাতুল ফিতর কার উপর ওয়াজিব হয়, কাদের পক্ষ থেকে আদায় করতে হয়-এইসব বিবরণ হাদিস ও ফিকহের কিতাবে বিস্তারিতভাবে আছে।
কিন্তু আমাদের সমাজে এই ‘ফিতরা’ আদায় নিয়ে বহু ভুল ধারণা এবং কাজ প্রচলিত আছে। আমাদেরকে সর্বপ্রকার ভুল-ভ্রান্তি থেকে বেঁচে থেকে সঠিকভাবে ফিতরা আদায়ে সচেষ্ট হতে হবে।