ধর্ম ও জীবন বিধান ::
রমজানের শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ইতিকাফ মসজিদে পালন করার নিয়ম। পুরুষদের মসজিদে ইতিকাফ করা আবশ্যক। রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফের বিধান হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। অর্থাৎ, এলাকাবাসীর কোনো একজন আদায় করে নিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। আর কেউ আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হবে।
কোনো এলাকায় যদি কেউ পুরো ১০ দিন ইতিকাফে না বলে তাহলে এর বিধান কী হবে? এমন একটি পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চেয়ে একজন বলেছেন—
আমাদের এলাকার জামে মসজিদে পূর্ণ দশ দিন ইতিকাফে বসার জন্য কেউ প্রস্তুত হয়নি। অবশ্য তিন জন মিলে ভাগ করে থাকতে চেয়েছে। জানতে চাই, এতে কি সুন্নাত ইতিকাফ আদায় হবে? এবং এলাকাবাসী সুন্নাত ইতিকাফের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হতে পারবে?
এমন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, মহল্লার কোনো একজনও পুরো ১০ দিন ইতিকাফে না বসলে কারো সুন্নত ইতিকাফ আদায় হবে না এবং এলাকাবাসী সুন্নত ইতিকাফ থেকে দায় মুক্ত হবে না। কারণ সুন্নত ইতিকাফের জন্য একজন হলেও রমজানের শেষের পুরো দশ দিন ইতিকাফ করতে হবে। তিন জন ভাগ করে দশ দিন অবস্থান করলে কারো সুন্নত ইতিকাফ আদায় হবে না; সেটা নফল ইতিকাফ বলে গণ্য হবে।
(ফাতহুল কাদীর ২/৩০৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৯; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি পৃ. ৩৮২; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫)
ইতিকাফের সময় করণীয় ও বর্জনীয়:
ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত ইবাদতগুলো সময়মতো পালন করা।
বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত ও নফল ইবাদত করা।
রাতের যতক্ষণ সময় জেগে থাকবেন ততক্ষণ জিকির, নফল নামাজ পড়া।
অতীতের পাপের জন্য তওবা করা ও সামনের দিনগুলোতে পাপ না করার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করা।
বিজোড় রাতগুলোর পুরো সময় ইবাদতে কাটানোর চেষ্টা করা।
বেশি বেশি ইস্তেগফার ও দরুদপাঠ করা।
কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও ওঠাবসায় কাউকে কষ্ট না দেওয়া।
বিশেষ ও দ্বীনি প্রয়োজন ছাড়া কারো সঙ্গে কথা না বলা। কারণ, ইতিকাফের সময় কথা বলা মাকরুহ।
আড্ডার আসর জমানো নাজায়েজ।
ধর্মীয় বই পুস্তক ছাড়া অন্য কোনো বইপুস্তক পড়া যাবে না।
যেকোনো গুনাহের উপকরণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
আল্লাহর নৈকট্য ও কদরের রাত্রির ফজিলত ও রহমত লাভের চেষ্টা করা।