পিন্টু দেবনাথ :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের চা বাগানগুলো এবং বস্তি বাড়িতে দোল উৎসব মেতে উঠছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম অনুষ্ঠান দোল উৎসব। এ উৎসবের রঙে রঙিন। বাগানে বাগানে চা-শ্রমিকেরা ফাগুয়ার রঙে মাতোয়ারা। এই ফাগুয়া উৎসব চা শ্রমিকদের অন্যতম বড় উৎসব। নাচ, গান, রঙ খেলাসহ নানা আয়োজনে এ উৎসব চলছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন চা বাগান ও গ্রামে দেখা যায়, শ্রমিক কলোনীর অলিতে গলিতে নানা রঙের দাগ। ছোট ছোট শিশুরা সারা গায়ে রঙ মাখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতে রঙ নিয়ে ঘুরছে সবাই। বড়রাও বসে নেই। একে অপরের গায়ে রঙ মাখিয়ে উৎসবের শুভেচ্ছা দিচ্ছেন সবাই। চা বাগানের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে চা বাগানের ঐতিহ্যবাহী কাঠিনৃত্য পরিবেশন করছে চা কাঠি নৃত্যের দল। রাধাকৃষ্ণ বন্ধনায় গোপীরা নানান গানে মাতিয়ে তুলছেন কাঠিনৃত্য।
অন্যদিকে চা বাগানের পাশাপাশি গ্রামে গ্রামে দোল উৎসবে মেতে উঠছেন সকল শ্রেণিপেশার লোকজন। মাধবপুর শিববাজারে দেখা কিশোর কিশোরীরা আনন্দে রং একে অন্যকে রাঙিয়ে তুলেছেন। করছেন ঘরে ঘরে ভিক্ষা।
স্থানীয় শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শারদীয় দুর্গা পূজার পর এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। ফাগুয়া উৎসবের দিনগুলো চা জনগোষ্ঠীর লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দে কাটানোর চেষ্টা করে। সব মিলিয়ে প্রায় প্রতিটি চা-বাগানেই এক অন্যরকম আবহ বিরাজ করে।
ফাগুয়া শুরু হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই স্বামীর বাড়ি থেকে মেয়েরা বাপের বাড়ি নাইওরে আসেন। চা-বাগানের ঘরে ঘরে ভালো রান্নাবান্না হয়। অনেক আনন্দ হয়। চা-শ্রমিকেরা সারা বছর বিভিন্ন সমস্যায় ভুগলেও উৎসবের দিনগুলোতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু ভালো থাকার চেষ্টা করেন।
ফাগুনের পূর্ণিমা তিথি থেকে এই দোল উৎসব শুরু হয়। চলবে পক্ষকাল ব্যাপি। এ উপলক্ষে প্রতিদিনই কারো না কারো ঘরে কীর্তন হয়। সবমিলে দোল উৎসব আনন্দময়।