Sunday, November 24, 2024
Homeবিনোদনলাইফস্টাইলসৎ বন্ধুর গুণাবলী

সৎ বন্ধুর গুণাবলী

সৎ বন্ধুর গুণাবলি

জীবন যাপন,

মানুষের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ বন্ধু। জীবনে চলার পথে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়, যারা তাদের একাকিত্বের সঙ্গী হয়, সুখ-দুঃখের ভাগিদার হয়। বিপদে পাশে দাঁড়ায়, সিদ্ধান্তহীনতার সময় ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করে। একান্ত ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো যার সঙ্গে শেয়ার করে তা থেকে উত্তরণের পথ বের করা যায়।

 

মানুষের স্বভাব-চরিত্রেও বন্ধুর প্রভাব রয়েছে, একসঙ্গে ওঠাবসা করলে প্রত্যেকের মাঝে তার বন্ধুর কিছু অভ্যাসও চলে আসে। তাই বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা মুমিনের দায়িত্ব। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মানুষ তার বন্ধুর রীতিনীতির অনুসারী হয়। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকেই যেন লক্ষ করে, সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে।

 

’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৩৩)

এমন ব্যক্তিকে বন্ধু হিসেবে নির্বাচন করা উচিত, যে তার দুনিয়া-আখিরাতের সফলতার সহযোদ্ধা হয়। নিম্নে সৎ বন্ধুর কিছু গুণ তুলে ধরা হলো—

 

মুত্তাকি হওয়া : বন্ধুত্বের মূল ভিত্তি হলো, একনিষ্ঠতা ও বিশ্বস্ততা, যা একজন প্রকৃত মুত্তাকি ছাড়া অন্য কারো জন্য রক্ষা করা কঠিন। যে আল্লাহকে ভয় করে, সে কখনো তার বন্ধুর ক্ষতি করবে না, বন্ধুর তথ্যগুলো ব্যবহার করে তাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করবে, কাউকে তার বন্ধুর গিবত করার সুযোগ দেবে না, বন্ধুর ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো কারো সামনে প্রকাশ করে দেবে না। দুনিয়া ও আখিরাতে বন্ধুকে বিপদে পড়তে হয়, এমন কোনো কাজে লিপ্ত হতে দেবে না।

 

এ জন্যই নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তুমি মুমিন ছাড়া অন্য কারো (অন্তরঙ্গ) বন্ধু হবে না এবং তোমার খাদ্য যেন পরহেজগার লোকে খায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৩২)

মানুষ অনেক সময় পাপপ্রবণ বন্ধুদের খপ্পরে পড়ে নিজেও পাপের পথে পা বাড়ায়, তাই বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে ঈমানদার ও পরহেজগার ব্যক্তিকে বন্ধু হিসেবে বেছে নেওয়া উচিত।

 

আন্তরিক হওয়া : বন্ধুত্বে পরস্পর আন্তরিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রকৃত বন্ধু তার বন্ধুর জন্য আন্তরিক হবে। তার বন্ধুকে ভালোবাসবে।

 

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ভালোবাসার কেন্দ্রস্থল। তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই, যে ব্যক্তি অন্যকে ভালোবাসে না এবং অন্য মুসলিমও তার প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টি নিক্ষেপ করে না।’ (বায়হাকি)

বন্ধুর দোষ গোপন রাখা : সাধারণত বন্ধুরা তার বন্ধুর ব্যক্তিগত অনেক তথ্য জানে, যেখানে তার অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতিও থাকে, সৎ বন্ধুরা ওই তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে বন্ধুকে বিপদে ফেলার পাঁয়তারা করবে না, তাকে হেয় করার জন্য সে তথ্যগুলো অনত্র প্রচার করবে না। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার ওপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মিটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মিটাবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৯৩)

 

সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখা : সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখা বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে আছে বন্ধু বেশে কিছু তথ্য হাতানোর জন্য, পরে সেগুলোর সঙ্গে কিছু মিথ্যা তথ্য মিলিয়ে তা ব্যবহার করে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে। এগুলো জাহান্নামিদের আলামত। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪১)।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments