নিজস্ব প্রতিবেদক,
হবিগঞ্জে সপ্তাহখানেক আগেও ছড়া দামে বিক্রি হয়েছে লেবু। দুই দিন ধরে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে কমতে শুরু করেছে লেবুর দাম। একদিকে খরা মৌসুম, অপর দিকে রমজান উপলক্ষে চাহিদা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যায় লেবু দাম। রমজানের দুই দিন আগে যে লেবু ২০০ টাকা হালি বিক্রি হয়েছে, এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার পাহাড়ি টিলায় সহজেই চাষ করা যায় লেবু। রজমান উপলক্ষে লেবুর চাহিদা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি লেবু বিক্রি হয়েছে দ্বিগুণ থেকেই তিন গুণ বেশি দামে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় চাহিদা কমার ফলে লেবুর দাম এখন কমতে শুরু করেছে।
লেবুচাষি, আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেবুর মৌসুম হচ্ছে বর্ষাকাল। এ সময় প্রচুর লেবু উৎপাদিত হয়। তখন দামও থাকে কম। শুষ্ক মৌসুমে লেবুর উৎপাদন প্রাকৃতিক কারণেই কমে যায়। রমজানে লেবুর চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে কিছুটা শিতিল হচ্ছে লেবুর বাজার। যেমন প্রতি দুই হাজার লেবু এখন বিক্রি হচ্ছে ১২-১৪ হাজার টাকায়। যেখানে সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হয়েছে ২০-২২ হাজার টাকায়।
সরেজমিনে জেলা শহরের শায়েস্তানগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি হালি মাঝারি লেবু ৬০-৮০ টাকা, চাষি লেবু ৮০ টাকা, টনা লেবু ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০ দিন আগেও এসব লেবু প্রতি হালি ৫০-৬০ টাকা বেশিতে বিক্রি হয়েছে।
সবজি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, তারা প্রতি হালি ছোট লেবু ৬০ টাকা এবং বড় লেবু ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
বাহুবল উপজেলার লেবু বাগান মালিক মৌলা মিয়া জানান, ১০০ বিঘা জমিতে লেবু চাষ করেছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লেবুর দাম বেশি। তবে আগাম বৃষ্টি না থাকার কারনে বাগানে লেবুর পরিমান কম। উৎপাদন কম হওয়ায় ১৫ দিন পর পর আড়তে লেবু দিচ্ছেন তিনি।
আড়তের ম্যানেজার আউয়াল মিয়া বলেন, এ বছর যে হারে লেবু দাম বেড়েছে গত ১০ বছরেও এমনটা হয়নি। গত এক সপ্তাহের পর থেকে এখন লেবু দাম কমতে শুরু করেছে। মৌসুমি বৃষ্টি শুরু হলেই লেবুর দাম কমে যাবে।
কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, লেবু চাষ করছেন ১৫ বিঘা জমিতে। রোজার আগ থেকে বিক্রি করছেন লেবু। এবার দাম ভালো পেয়েছেন। তবে আগাম বৃষ্টি না থাকার কারনে বাগানে লেবুর সাইজ ছোট।
বাগানমালিক সোহেল আহমেদ বলেন, ১২ বিঘা জমিতে লেবু চাষ করছেন। এখন লেবুর দাম বেশি ঠিকই কিন্তু গাছে লেবু নেই। সারা বছরে মধ্যে ২-৩ মাসই লেবুর দাম কিছুটা বেশি থাকে। আর বছরের অন্য সময়ে লেবু বিক্রি হয় পানির দরে।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আকতারুজ্জামান বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়, লেবুগাছ পরিচর্যার সময়। তারপরও কিছু লেবু পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে চাহিদার চেয়ে জোগান কম, এ জন্য দাম বেড়ে গেছে।