দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে তুহিন মিয়া নামের এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরকে চেতনানাশক খাইয়ে বিয়ের অঙ্গীকারনামা সম্পাদনের অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি লাকী বেগম নামের একজনকে বিবাদী করে ভিকটিম তুহিন মিয়ার পক্ষে বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সহকারী জজ আদলতে একটি মামলা দায়ের করেছেন তুহিনের মা মোছাঃ জুসনা বেগম। মামলা নং ২৫/২০২৫ ইং।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলা গ্রামের মৃত সফিকুল ইসলামের পুত্র তুহিন মিয়া (১৭) কে একই ইউনিয়নের টিলাগাঁও গ্রামের মানিক আলীর কন্যা মামলার বিবাদী মোছাঃ লাকী বেগম দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের জালে ফাসিয়ে বিয়ে করার পাঁয়তারা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি তুহিন মিয়াকে ফুসলিয়ে টিলাগাঁও গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে চেতনা নাশক খাইয়ে তিনটি ষ্টাম্পে সাক্ষর নিয়ে বিবাহের অঙ্গীকারনামা সম্পাদনা করেন লাকী বেগম। এই কাজে সহযোগিতা করেন টিলাগাঁও গ্রামের ইয়াকুব আলী, লক্ষীপুর চকবাজার গ্রামের জসীম উদ্দিন এবং মসুদ নামের একাধিক ব্যক্তি। ওইদিন চেতনা নাশকের প্রভাবে তুহিন মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে লাকী বেগম ও তাঁর সহযোগীরা লক্ষীপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার বাড়ির সামনে অচেতন অবস্থায় ফেলে চলে যান। পরে খবর পেয়ে তুহিন মিয়ার মা জোসনা বেগম ও তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা ঘটনাস্থল থেকে অচেতন অবস্থায় তুহিনকে উদ্ধার করে ওইদিনই দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। পরে তুহিনের পরিবার খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, বিবাদী লাকী বেগম অন্যান্য ব্যক্তিদের সহযোগীতায় তুহিনকে চেতনানাশক খাইয়ে তাঁর স্বাক্ষর নিয়ে বিয়ের অঙ্গীকারনামা সম্পাদন করেছেন।
মামলার বাদী জোসনা বেগম বলেন, ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ২ ধারা অনুযায়ী বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলের বয়স ২১ বছর হতে হয়। অথচ জন্মসনদ অনুযায়ী আমার ছেলের বয়স ১৭ বছর। তাছাড়া চুক্তি আইন অনুযায়ী নাবালক কোনো পুরুষ বা মহিলা কোনো চুক্তি সম্পাদন করতে পারেনা। কিন্তু মামলার বিবাদী লাকী বেগম ও তাঁর সহযোগিতা বেআইনিভাবি আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে চেতনানাশক খাইয়ে বিয়ের অঙ্গীকারনামা তৈরি করেছে। আমার ছেলে এসব অঙ্গীকারনামা সম্পর্কে আমি কিছুই জানেনা। আমি মাননীয় আদালতের কাছে ন্যায় বিচার চাই।
মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে মামলা বিবাদী লাকী বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোনো চেতনানাশক খাওয়ানো হয়নি। তুহিনের সাথে আমার একবছরের রিলেশন ছিলো। পরে আমরা উভয়ে সেচ্ছায় বিয়ে করেছে। কিন্তু বিয়ের পর তাঁর পরিবারের লোকজন তাকে জোরপূর্বক ধরে বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অজ্ঞান করে হাসপাতালে ভর্তি করায়।’