দোয়ারাবাজার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
শিক্ষার্থী ৩১৮জন। তার মধ্যে ছাত্র ১৩৭ ও ছাত্রী ১৮১ জন। শিক্ষক মোটে ৩ জন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক,সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ, ইংরেজি,গণিত,বিজ্ঞান,আইসিটি, ভিপিএড,চারু ও কারু কলা,লাইব্রেরীয়ান বিষয়ের শিক্ষক নাই। এ পরিসংখ্যান সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়।ক্লাস চালাতে হিমশিম খাওয়ার নেপথ্যে আছে এ প্রতিষ্ঠানের মোট ১৩টির মধ্যে ৯ টি পদের শূন্যতা।সাময়িক বরখাস্ত ১জন। বিদ্যালয় গিয়ে উপস্থিতি দেখা গেছে প্রায় ৮৫ শতাংশ।
শ্রেণী কক্ষের বেহালদশার মধ্যে কিভাবে পাঠদান চলছে জানতে চাইলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক
মো:হযরত আলী বলেন, ভবন ও শ্রেণী কক্ষের অভাবে পাঠদানে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। অবকাঠামোগত দিক থেকে বিদ্যালয়ে রয়েছে ৫ কক্ষবিশিষ্ট একটি দ্বিতীয় তলা ভবন ও এল আকৃতির ৫ কক্ষবিশিষ্ট টিনের ঘর। টিনের ঘরটির জরাজীর্ণ অবস্থা।৫ কক্ষবিশিষ্ট দ্বিতল ভবনের অফিস রুম ২ টি,কম্পিউটার ডিজিটাল ল্যাব ১ টি ও ক্লাস রুম ২ টি। টিনে মরিচা ধরে ফুটো হয়ে যাওয়ায় একটু খানি বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে।বিগত ২ বছর ধরে টিনশশেট ঘরের চালা নেই।পানি পরে যার কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারে না। এমনকি টিনের ঘরের শ্রেণী কক্ষে বৈদ্যুতিক পাখা খুলে রেখেছি কারন এতো খারাপ অবস্থা বৃষ্টির পানি পড়ে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এতে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে প্রধান শিক্ষক,সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ, ইংরেজি,গণিত,বিজ্ঞান,আইসিটি, ভিপিএড,চারু ও কারু কলা,লাইব্রেরীয়ান বিষয়ের শিক্ষক নাই।সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত। ৩ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক দ্বারা এসব বিষয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা অর্জন করতে পারছে না। শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় অভিভাবকরা খুবই উদ্বিগ্ন। উল্লেখিত পদের শিক্ষক খুবই দরকার বলে জানান সহকারী শিক্ষকরা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে সমাজ বিজ্ঞানের সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ জসিম আহমেদ চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।বিগত ৩০ জানুয়ারী নাশকতার মামলায় জসিম আহমেদ চৌধুরী জেল হাজতে গেলে উনাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।বর্তমানে ধর্মীয় সিনিয়র শিক্ষক মো:হযরত আলী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।বাংলা,কৃষি ও ধর্ম বিষয়ে ১ জন করে শিক্ষক থাকলেও প্রধান শিক্ষক,সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ, ইংরেজি,গণিত,বিজ্ঞান,আইসিটি, ভিপিএড,চারু ও কারু কলা,লাইব্রেরীয়ান বিষয়ের শিক্ষক নাই।সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত। ৩ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক দ্বারা এসব বিষয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা অর্জন করতে পারছে না। শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় অভিভাবকরা খুবই উদ্বিগ্ন। অবকাঠামোগত দিক থেকে বিদ্যালয়ে রয়েছে ৫ কক্ষবিশিষ্ট একটি দ্বিতীয় তলা ভবন ও এল আকৃতির ৫ কক্ষবিশিষ্ট টিনের ঘর। টিনের ঘরটির জরাজীর্ণ অবস্থা।৫ কক্ষবিশিষ্ট দ্বিতল ভবনের অফিস রুম ২ টি,কম্পিউটার ডিজিটাল ল্যাব ১ টি ও ক্লাস রুম ২ টি। টিনে মরিচা ধরে ফুটো হয়ে যাওয়ায় একটু খানি বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে।বিগত ২ বছর ধরে টিনশশেট ঘরের চালা নেই। এতে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো:হযরত আলী জানান,ছাত্রীদের কমনরুম, শ্রেণিকক্ষসহ ১০টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের অফিস কক্ষ, লাইব্রেরি কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব কক্ষ, মিলনায়তন এসব মিলিয়ে মোট ১৫টি কক্ষের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে জরাজীর্ণ টিনের ঘরের ৫টি কক্ষসহ কক্ষ সংখ্যা হচ্ছে ১০টি মাত্র। এ অবস্থায় নতুন একাডেমিক ভবন একান্ত প্রয়োজন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো হযরত আলী বলেন, টিনের শ্রেণী কক্ষ সেটার দরজা জানালা ভাঙ্গা, বৃষ্টির দিনে খুব খারাপ অবস্থা হয়, বেশি বৃষ্টিতে এখানে বসা যায় না। আমার স্কুলের রেজাল্ট ভালো। তারপরও শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য বাড়ি বাড়ি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে আমাদের স্কুলে ভর্তি করাই কিন্তু কয়েক মাস পরে তারা অনেকেই চলে যায় শুধু অবকাঠামোগত দিক দেখে। তাই আমাদের স্কুলের নতুন একটা ভবন ও চাহিদা দেয়া শিক্ষক হলে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষার মান আরো উন্নত করতে পারবো।
সাবেক শিক্ষার্থী ইমন ভুইয়া বলেন,বাংলাবাজার ইউনিয়নের মধ্যে এটা ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যালয়টি আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান, অতি দ্রুত বিদ্যালয়টির সংস্কার আশা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান,সদ্য সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জসিম আহমেদ চৌধুরী দোয়ারাবাজার উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে নামে বেনামে বিভিন্ন প্রকল্প এনে নিজের পকেট ভারী করবছেন। হকনগর শহীদ স্মৃতি সৌধ এলাকায় বিদ্যালয়ের নামে পাথর উত্তোলন করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেছেন। একটা নতুন ভবনের জন্য কোনো চেষ্টা কোনো দিন করেনি। উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হওয়ায় কেউ তাকে কিছু বলতে পারেনি, সব সময় দলের প্রভাব দেখিয়ে চলতেন।
দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাহমুদা আক্তার সিমু বলেন, আমাদের স্কুলের ক্লাস রুমের অবস্থা খুবই খারাপ সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা কাদা হয়ে যায়। আমাদের ভালো ক্লাস রুম দরকার। দরজা জানালা ভালো না। এতে আমাদের কষ্ট হয় ক্লাস করতে।
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রুমা আক্তার বলেন, আমাদের স্কুলে মেয়েদের জন্য কোনো কমন রুম নাই। ক্লাস রুম ভাঙ্গাচুরা সরকারের কাছে আমাদের আবেদন যাতে করে আমাদের স্কুলে একটি ভালো ভবন করে দেয়।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.হযরত আলী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টিতে চাহিদার তুলনায় অর্ধেকও নাই শ্রেণী কক্ষ। এনটিআরসিএ’র কাছে শিক্ষকের আমরা চাহিদা দিয়েছি কিন্তু কবে পাবো সেটা জানি না। এ ব্যাপারে আমি কয়েকবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলেছি।