স্বাস্হ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক,
কমলা, গোলাকৃতির এই ফলটি পাকার পরেই কমলা রঙ ধারণ করে। কমলায় সব থেকে বেশি থাকে ভিটামিন সি। এছাড়াও কমলায় উপস্থিত থাকে ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কোলিনসহ আরো কিছু উপাদান। আর এর প্রত্যেকটি উপাদান মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত ভুমিকা।
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক কমলা খেলে আমাদের শরীরের জন্য কী কী সুবিধা ও অসুবিধা হতে পারে-
কমলা খাওয়ার সুবিধা,
কোলেস্টেরল কমাতে:
কমলাতে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে। যাকে বলা হয় পেকটিন। এটি রক্ত স্রোতে শোষিত হওয়ার আগে শরীর থেকে কোলেস্টেরল দূর করে। এটি খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
চোখের জন্য:
কমলা ক্যারোটিনয়েডের সমৃদ্ধ উৎস। এগুলোর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ চোখের শ্লেষ্মা ঝিল্লি স্বাস্থ্যকর রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডায়াবেটিস:
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কমলা খাওয়া উপকারী। এতে উপস্থিত পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এটি ইনসুলিন উৎপাদনে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করে।
ত্বকের জন্য:
কমলা লেবুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলোর জন্য পরিচিত। ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যাল ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। এটি ত্বক সুন্দর করতে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে:
কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা স্বাস্থ্যকর ইমিউন সিস্টেমের যথাযথ কার্যকারিতার জন্য ভালো। যেমন সর্দি রোধ এবং বার বার কানের সংক্রমণ রোধে ভালো।
বাতের ক্ষেত্রে:
কমলাতে ভিটামিন সি রয়েছে; যা একটি ভালো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। যা জয়েন্টগুলোতে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এগুলো ছাড়াও, ফিয়ানোট্রিয়েন্ট জেক্সটিং এবং বিটা-ক্রিপ্টোক্সানথিনের জারণ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। এটি হাড় সম্পর্কিত ব্যাধি সৃষ্টি করতে রোধ করে।
ক্যান্সার থেকে রক্ষা করার জন্য:
কমলা লেবুতে ডি-লিমোনিন থাকে, এটি এক ধরণের যৌগ। যা ফুসফুসের ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার এমনকি স্তনের ক্যান্সারের মতো ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। কমলা লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলো উভয়ই শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করতে সহায়তা করে। ফলের তন্তুযুক্ত প্রকৃতি এটিকে ক্যান্সার থেকেও রক্ষা করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ক্যান্সারে আক্রান্তের ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ডিএনএতে রূপান্তর ঘটে যা ভিটামিন সি দ্বারা প্রতিরোধ করা যায়।
কিডনিতে পাথর:
কমলা লেবু কিডনির জন্য উপকারী। কারণ এতে ভিটামিন সি রয়েছে যা কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করে। কমলা লেবু অবশ্যই আপনার ফলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
কমলা খাওয়ার অসুবিধা,
কমলার উপকারের পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন-
> কমলা খাওয়া গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের জন্য উপকারী। তবে যদি সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়, অন্যথায় এটি শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
> কমলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। তবে অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে পেটে ব্যথা, বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
> হর্টবার্নের সমস্যা এরই মধ্যে যাদের রয়েছে, তাদের কমলা লেবু এড়ানো উচিত।
> ছোট বাচ্চাদের বেশি কমলা লেবু দেওয়া উচিত নয়। কারণ এটি পেটে ব্যথা এবং সিনকোপের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে।