সিলেট প্রতিনিধি,
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর ৭ নম্বর গ্যাস কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে নতুন করে আরো ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে এ কূপ থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে পরীক্ষামূলক গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই সংযোগের মাধ্যমে দৈনিক আরো ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হলো জাতীয় সঞ্চালন লাইনে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮৬ সালে এই কূপ খনন করা হয়। ১৯৮৭ সাল থেকে ২০০০ মিটার গভীরে তেল পাওয়া যায়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেল উৎপন্ন করা হয়। এরপর ২০০৪ সালে ওয়ার্ক ওভার করে ১৯০০ মিটার গভীরে গ্যাস মেলে।
২০২৪ সালের জুনে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এ বছরের জুলাইয়ে ফের ওয়ার্ক ওভারে গেলে ১২০০ মিটার গভীরে ৯০ থেকে ৯৫ বিলিয়ন কিউসেক ঘনফুট গ্যাসের মজুদ পাওয়া যায়। এ গ্যাস আগামী ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত উত্তোলন করা যাবে।’
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের এমডি আরো বলেন, ‘সিলেট-৭ নম্বর কূপ পেট্রোবাংলার ১৫তম গ্যাস ক্ষেত্র।
কূপ থেকে দৈনিক ৫০ কোটি টাকার গ্যাস ও ৪ লাখ টাকার কনডেনসেট উত্তোলন করা হবে।’
এর আগে গত ২২ অক্টোবর সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর তেলের পুরনো কূপ (সিলেট-৭নং কূপ) সংস্কার করতে গিয়ে দুই স্তরে নতুন গ্যাসের স্তরের সন্ধান মেলে। দুই দফায় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে এক হাজার ২০০ মিটার গভীরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরনো গ্যাস কূপে জুলাই মাস থেকে অনুসন্ধান চলে। গত ১৪ অক্টোবর কূপের ২০১০ মিটার গভীরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে।
এরপর ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে আরো সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে। এই টেস্ট হিসেবে এক সপ্তাহ গ্যাস উত্তোলন করা হয়। পরবর্তীতে ওই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য মতে, ১৯৮৬ সালে জৈন্তাপুরের হরিপুর সিলেট-৭ নম্বর কূপে তেল উত্তোলন শুরু হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেল উত্তোলন করা হয়। এরপর তেল উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়। এবার পুরনো কূপে দুটি লেয়ারে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। সিলেট থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে আসছিল। এখন সেটি আরো বাড়ছে।