স্টাফ রিপোর্টার,
অফিসিয়াল শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে বদলির আদেশপত্র প্রধান গ্রন্থাগারিকের অফিসিয়াল মেইল ব্যবহার করে প্রচার-প্রসারের অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক সহকারী গ্রন্থাগারিকের বিরুদ্ধে। এদিকে ঐ সহকারী গ্রন্থাগারিক বলছেন, এ বিষয়ে তিনি অবগতই নন। সম্মতি ছাড়া অন্যের ই-মেইল ব্যবহার করা নিয়মভঙ্গের শামিল; বিষয়টি সত্য হলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মকর্তা সহকারী গ্রন্থাগারিক আখতারুজ্জামান রাসেলের বদলি আদেশ হয়। বদলির আদেশপত্র থেকে জানা যায়, ঐ কর্মকর্তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটির গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে তার ঐ বদলির আদেশপত্রটি গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগারিকের অফিসিয়াল ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন দফতর, ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের মেইলে পাঠানো হয়।
পরবর্তীতে এ নিয়ে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা উঠতে দেখা যায়। শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলছেন, একজন সহকারী কর্মকর্তার বদলির আদেশ অফিসিয়ালি দফতর প্রধানের মেইলে প্রচারের নিয়ম নেই।
এতে অফিসিয়াল শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। কারো বদলির আদেশ হলে রেজিস্টারের দফতরের ডেসপ্যাচ থেকে চিঠির মাধ্যমে অন্যান্য দফতর, ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের জানানো হয়ে থাকে।
তবে আকতারুজ্জামন রাসেল নিজেই এই কাজ করেছেন বলেন অভিযোগ করেন সদ্য সাবেক প্রধান গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল বাতেন। তিনি বলেন, ‘লাইব্রেরিয়ানের সম্মতি ছাড়া লাইব্রেরিয়ানের ই-মেইল কেউ ব্যবহার করতে পারেন না। সহকারী লাইব্রেরিয়ান আখতারুজ্জামান রাসেল কাজটা ঠিক করেনি। তিনি যা করেছেন, এটা ভুল করেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাসেলের বদলির আদেশটা হচ্ছে তার ব্যক্তিগত সার্কুলার। তাই তিনি চাইলেই লাইব্রেরিয়ান ই-মেইল ব্যবহার করে এটা করতে পারেন না। এ ই-মেইলের ব্যবহারের এনটাইটেল (অধিকারী) নেই তার। আমি যতটুকু জানি তিনি এ বিষয়ে বর্তমান উপ-গ্রন্থাগারিক মতিউর রহমান খানের সম্মতিও নেননি।’
‘দায়িত্ব থাকাকালীন স্টুডেন্টদের ই-ক্লিয়ারেন্সের জন্য রাসেল আইটি দক্ষ হওয়ায় তাকে লাইব্রেরিয়ান আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছেন’- জানিয়ে আজিজুল বাতেন বলেন, ‘কিন্তু তিনি সেটা এখন ভুলভাবে ব্যবহার করছেন।’ তিনি বলেন, ‘রাসেলের বদলির বিষয়টা রেজিস্ট্রার দফতর থেকে সবাইকে জানানো হয়েছে। জানানোর দায়িত্ব রেজিস্টারের। আমি যখন রাসেলের ই-মেইলটা পাই, সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি। আইডির পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে আমার নাম মুছে দেয়, সেজন্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নতুন যিনি দায়িত্ব আসবেন তার নাম যোগ করতে বলেছি।’
এ বিষয়ে উপ-গ্রন্থাগারিক মতিউর রহমান কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গ্রন্থাগারিকের অফিসিয়াল মেইল আইডি ব্যবহার করে আখতারুজ্জামান রাসেল ব্যক্তিগত জায়গা থেকে সবাইকে মেইলটা পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি আমার কোনো সম্মতি নেয়নি। তবে আমরা এরই মধ্যে মেইল আইডির পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলছি।
ই-মেইল ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে আখতারুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। অন্য কোনো বিষয় হলে বলতে পারেন।’
ঘটনাটি সত্যি হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম।