Sunday, November 24, 2024
Homeসিলেট বিভাগসুনামগঞ্জদোয়ারাবাজারে খুবলে খাচ্ছে চিলাই নির্বিকার প্রশাসন

দোয়ারাবাজারে খুবলে খাচ্ছে চিলাই নির্বিকার প্রশাসন

 

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::

সরকার পতনের পরও থামছে না বালু খেকোদের দৌরাত্ম্য। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ত্রাসিত হচ্ছে দোয়ারাবাজারের চিলাই নদী। উপজেলা ভূমি অফিসের একশ্রেণির অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশে বালুখেকো সিন্ডিকেট এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাতভর ড্রেজার মেশিনে বালি উত্তোলন করে ট্রলার বোঝাই করে পাচার হয় ওই নদীর বালি। সরাসরি এসিল্যান্ড অফিসের লোকজন বালুখেকোদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় প্রশাসনের উধর্বতন কর্মকরর্তারাও অভিযান চালিয়ে বারবারই ব্যর্থ হন। স্পটে যাওয়ার আগেই ওই অফিস থেকে খবর পৌঁছানোর কারণে রক্ষা পেয়ে যায় বালুখেকোরা। আর এতে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপও গ্রহণ করতে পারছেনা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

 

সম্প্রতি চিলাই নদীতে অবাধে বালি উত্তোলন বন্ধে একাধিক অভিযোগ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডারসহ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনও প্রতিকার মিলছে না। অপরদিকে চিলাই নদী বালুখেকোদের কবলে থাকার সংবাদ বারবার গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হলেও টনক নড়ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের।

 

বালুখেকো চক্রের লোকজন বলছে, তারা স্থানীয় ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করেই  দেদারসে বালি বিক্রি করে আসছে। আগে দিনে বালি উত্তোলন করা হতো এখন রাতে বালি তুলে ট্রলার বোঝাই করে বিক্রি করা হয়।

 

এদিকে বালু উত্তোলন-আহরণ বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের নেই কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। সংশ্লিষ্টদের এমন নমনীয়তার কারণে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করা হলেও সরকার বঞ্চিত হচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে।

 

উল্লেখ্য, ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে আসা দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজার, বোগলা, সুরমা, দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাহাড়ি নদী ‘চিলাই’ মিলিত হয়েছে সুরমা নদীর সঙ্গে। ওই নদীর দুই তীর ঘেঁষে সুন্দরপই রইছপুর, রাখালকান্দি, গোজাউড়া, রামনগর, বাঘমারা, ভোলাখালি, ভিখারগাঁও, বালুচরা, উরুরগাঁও, কিরণপাড়া ও বাঘরাসহ অন্তত ১৫টি গ্রাম রয়েছে। অব্যাহত পাড় ভাঙনের ফলে ওই নদী হতে বালি উত্তোলনে স্থানীয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

 

স্থানীয়রা বলেছেন, চিলাই নদীতে বালু কমে গেছে। এরপরেও ড্রেজার মেশিন দিয়ে অনেক গভীর থেকে তোলা হচ্ছে বালু। গভীর রাতে ড্রেজার মেশিনসহ শত শত বারকি নৌকায় বালু উত্তোলন করা হয়। গেল বছর এভাবে উত্তোলন করা বেশকিছু বালু জব্দ করে কম মূল্যে নিলাম দেয়া হয়েছিল। নিলামে বিক্রয় করা বালু বহনের অজুহাতে দিনের বেলায়ও বালু উত্তোলন করে বিক্রয় করা হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। এখন রাতের বেলায় ড্রেজার মেশিনের তান্ডব চলছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। এতে নদী ভাঙনে ক্ষতির শিকার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে বালু উত্তোলনের ফলে অনেক রাঘববোয়ালরা অযথা অহেতুক জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতির নাম ভাঙ্গিয়ে ফায়দা লুটছেন ।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু বলেন, চিলাই নদীর বালিখেকোদের দমনে ইতোমধ্যে অভিযান করা হয়েছে। তাদের দৌরাত্ম্য কমাতে প্রশাসনিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments