Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the td-cloud-library domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/sylheterkagoj/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
কমলগঞ্জে চা-শ্রমিক সংঘের সম্মেলনে বক্তারা ‘চা-শিল্পের ১৭০ বছর পরও শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা’ - Sylheter Kagoj : সিলেটের কাগজ |
Sunday, April 20, 2025
Homeসিলেট বিভাগমৌলভীবাজারকমলগঞ্জে চা-শ্রমিক সংঘের সম্মেলনে বক্তারা ‘চা-শিল্পের ১৭০ বছর পরও শ্রমিকদের মজুরি মাত্র...

কমলগঞ্জে চা-শ্রমিক সংঘের সম্মেলনে বক্তারা ‘চা-শিল্পের ১৭০ বছর পরও শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা’

মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি:::

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চা শ্রমিক সংঘের সম্মেলনে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিকনেতা চৌধুরী আশিকুল আলম ‘চা-শ্রমিকদেরকে সবচেয়ে অবহেলিত শ্রমিক আখ্যায়িত’ করে বলেন চা-শিল্পের ১৭০ বছর পরও চা-শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা। সম্প্রতি ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রদানের পরও শ্রমিকদের মজুরি হয়েছে মাত্র ১৭৮.৫০ টাকা। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্দ্ধগতির সময়ে এই মজুরি দিয়ে কি করে একজন শ্রমিক ৫/৬ জনের পরিবারের ভরণপোষণ করবে? অথচ বর্তমান বাজারদরে ৬ জনের একটি পরিবারের জন্য ন্যূনতম খরচ পড়ে ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। চা-শ্রমিকদের হাড় ভাঙ্গা খাটুনিতে চায়ের রেকর্ড পরিমান উৎপাদন হচ্ছে, চা উৎপাদনকারী দেশগুলো মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে ৯ম স্থান অর্জন করে নিয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির ১ম জেলা সম্মেলন সকাল ১১ টায় কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর জনমিলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির অন্যতম নেতা গণেশ ভাস্কর। সংগঠনের যুগ্ম-আহাবয়ক হরিনারায়ন হাজরারা পরিচলানায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিকনেতা চৌধুরী আশিকুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন, সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও চট্টগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক ওমর ফারুক, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক অবনী শর্ম্মা ও বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, চা-শ্রমিক সংঘের সাবেক আহবায়ক দিনেশ কর্মকার, চা-শ্রমিক সংঘ সিলেট জেলা শাখার প্রতিনিধি শিপন মুন্ডা, চা শ্রমিক নেতা মধু রজক, কানিহাটি চা-বাগানের রামভজন রবিদাস, নারী চা-শ্রমিক নেত্রী লছমী রাজভর, সুনিয়া ভাস্কর, বাবুচাঁদ রবিদাস, লক্ষèী রানী বাক্তি প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, ২০২২ সালের আগষ্টে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা-শ্রমিকরা খেয়ে না খেয়ে জানবাজী রেখে দীর্ঘ ১৯ দিনের লাগাতার কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ, রাজপথ-রেলপথ অবরোধের মতো কঠিন সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে দৈনিক ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে মজুরি ১৭০ টাকা কার্যকর করা হয়েছিল। এমন কি শ্রমিকদের হাড়ভাঙ্গা খাটুনির বকেয়া ৩০ হাজার ২০০ টাকা এরিয়াকে লামসাম হিসেবে মাত্র ১১ হাজার টাকা প্রদান করে শ্রমিকদের ঠকিয়ে মালিকের স্বার্থরক্ষা করা হয়। ১৭০ টাকা মজুরি মেয়াদ ২০২২ সালে উত্তীর্ণ হওয়ার ২০ মাস অতিক্রান্ত হলেও নতুন মজুরি কার্যকরের ব্যাপারে নির্বিকার। যুগ যুগ ধরে বসবাস করার পরও চা-শ্রমিকদের ভূমির অধিকার নেই। নেই শিক্ষা, চিকিৎসার মত মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা নেই। যার কারণে চা-শ্রমিকদের মধ্যে শিক্ষিতের হার কম; আবার অপুষ্টি, রোগ-শোক ও মাতৃমৃত্যুর হার অনেক বেশি।
প্রধান অতিথি মালিক, সরকার ও দালাল নেতাদের শ্রমিকস্বার্থ বিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, সকল ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থেকে সৎ, সংগ্রামী, আপোসহীন, শ্রেণি সচেতন নেতৃত্বে সংগঠন ও সংগ্রাম গড়ে তুলে দাবি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হবে।
সম্মেলনে রাজদেও কৈরীকে সভাপতি, শ্যামল অলমিক ও মধু রজককে সহ-সভাপতি এবং হরিনারায়ন হাজরাকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটি গঠন করা হয়। নবগঠিত কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান অতিথি চৌধুরী আশিকুল আলম। সম্মেলন শেষে কয়েকশ চা-শ্রমিকের অংশগ্রহণে লাল পতাকার বর্ণাঢ্য র‌্যালী শমসেরনগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সম্মেলন থেকে চা-শ্রমিকনেতারা সুস্থভাবে বেঁচে থাকা ও উৎপাদনে সক্রিয় থাকার প্রয়োজনে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে ৬ সদস্যের পরিবারে ভরণ পোষণের খরচ হিসাব করে ২০২৩-২০২৪ মেয়াদের জন্য নি¤œতম মজুরি নির্ধারণ এবং একটি পরিবারের সাপ্তাহিক প্রয়োজনের অনুপাতে চাল, আটা, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, চা-পাতাসহ পূর্ণ রেশন প্রদান, ভূমির অধিকার প্রদান, চা-শিল্পে নৈমিত্তিক ছুটি (বছরে ১০ দিন) কার্যকর ও অর্জিত ছুটি প্রদানে বৈষম্যসহ শ্রম আইনের বৈষম্য নিরসন করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মজুরি ও উৎসব বোনাস প্রদানে সকল অনিয়ম বন্ধ করে শ্রমআইন মোতাবেক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান, ফুলতলা চা-বাগানসহ বন্ধ সকল চা-বাগান চালু, বকেয়া মজুরিসহ নিয়মিত সকল চা-বাগানের শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ এবং ৯০ দিন কাজ করলেই সকল শ্রমিককে স্থায়ী করার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments