গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি:
স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর বাজারে অবস্থিত ‘ইউনাইটেড মেটারনিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার’। এবার উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দিয়েছে। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইসলাম আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোয়াইনঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদুল ইসলাম এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে সাথে ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেস্থিসিয়া) ডাক্তার মিজানুর রহমান মামুন ও জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনী এন্ড (অব) ডাক্তার সবিনা আক্তার।
গতকাল (১৭ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার জালালাবাদ টাইমসসহ স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক এ ‘গোয়াইনঘাটে নার্সের হাতে ডেলিভারি, চার নবজাতকের মৃত্যু’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাঈদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় ইউনাইটেড মেটারনিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করেন তিনি। কিন্তু ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদনের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনো নার্স নেই। মূলত ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ইসলাম আলী ও তার স্ত্রী সানজিদা আক্তারকে দিয়ে অনুমোদন ছাড়াই দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে এটি পরিচালনা করে আসছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদুল ইসলাম বলেন, ইউনাইটেড মেটারনিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠানটি অনোমদনহীন থাকায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, কিন্তু জরিমানা আদায়ে অস্বীকৃতি জানালে প্রতিষ্ঠানের মালিক ইসলাম আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসক ডাক্তার কিশলয় সাহা জানান, গত ১৫ তারিখের পর থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত একেকটি করে ৪/৫ টি নবজাতক মৃত্যুর ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার পরে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্তকালে ঐ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোন বৈধতা না থাকায় ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় ইসলাম আলী নামের একজনকে উপজেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক রমজান আলী বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের এর প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ইসলাম আলীকে গ্রেফতারের পর ভুক্তভোগী ঐ চার পরিবারের পক্ষথেকে গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।