Friday, November 8, 2024
Homeইসলামইসলামে ঘুষ ও হাদিয়ার মধ্যে পার্থক্য

ইসলামে ঘুষ ও হাদিয়ার মধ্যে পার্থক্য

 

 

 

ইসলাম ডেস্ক :

ঘুষ হলো স্বাভাবিক ও বৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থের ওপর অবৈধ পন্থায় অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করা। যে নামেই ডাকা হোক না কেন, ঘুষ ঘুষই। ঘুষ বা উৎকাচ আসে হাদিয়া বা উপহারের রূপ ধারণ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে একজন কর্মচারী কিছু সম্পদ এনে বলল, এটা আপনাদের (সরকারি) সম্পদ, আর এটা আমাকে দেওয়া হাদিয়া।

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) এতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সে তার মা-বাবার ঘরে বসে থাকল না কেন, তখন সে দেখতে পেত, তাকে কেউ হাদিয়া দেয় কি না? (বুখারি, হাদিস : ২৫৯৭)

 

ঘুষ ও হাদিয়ার মধ্যে পার্থক্য হলো, হাদিয়ায় আর্থিক কোনো লাভের উদ্দেশ্য থাকে না, কিন্তু ঘুষে আর্থিক লাভের আশা থাকে। ঘুষখোর আমানতের খিয়ানতকারী। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি যাকে ভাতা দিয়ে কোনো কাজের দায়িত্ব প্রদান করেছি, সে যদি ভাতা ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করে তাহলে তা হবে আমানতের খিয়ানত। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৯৪৩)

 

ঘুষ কিয়ামতের দিন ঘুষখোরের কাঁধে চেপে বসবে : রাসুলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত জনৈক কর্মচারীর হাদিয়া গ্রহণের কথা শুনে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি ঘোষণা দিলেন, ওই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! সদকার মাল থেকে স্বল্প পরিমাণও যে আত্মসাৎ করবে, সে তা কাঁধে নিয়ে কিয়ামত দিবসে উপস্থিত হবে।

 

সেটা উট হলে তার আওয়াজ করবে, গাভি হলে হাম্বা হাম্বা শব্দ করবে এবং বকরি হলে ভ্যা ভ্যা করতে থাকবে। (বুখারি, হাদিস : ২৫৯৭)

 

ঘুষখোররা ইবাদত ও দান-খয়রাত করেও ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত : রাসুলুল্লাহ (সা.) দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত, ধুলা মলিন এলোকেশে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, সে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করছে, হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম। আর তার দেহও হারাম উপার্জন দ্বারা গঠিত। তার প্রার্থনা কবুল হবে কিভাবে? (তিরমিজি, হাদিস : ২৯৮৯)

 

ঘুষখোরের তাওবা : ঘুষখোর ব্যক্তির দুই অবস্থা হতে পারে—

এক. হয়তো এমন এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছে যে বাধ্য হয়ে নিজের হক রক্ষার স্বার্থে একে ঘুষ দিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ঘুষগ্রহীতাকে অবশ্যই টাকা ফেরত দিতে হবে, যার কাছ থেকে সে ঘুষ নিয়েছে।

 

কেননা সে তাকে বাধ্য করে এই ঘুষ নিয়েছে। এর বিধান হলো জোর করে অর্থ আত্মসাতের হুকুমের মতো, বেচারা নিরুপায় হয়ে তাকে ঘুষ দিয়েছে। তাকে না পাওয়া গেলে তার ওয়ারিশের কাছে এই টাকা পৌঁছে দেবে। ওয়ারিশ খুঁজে পাওয়া না গেলে জাকাতের উপযুক্ত কাউকে দান করে দেবে।

 

দুই. ঘুষ গ্রহণ করেছে এক জালিমের কাছ থেকে, যেমন—হয়তো কেউ ঘুষ দিয়ে অবৈধ স্বার্থ উদ্ধার করিয়ে নিয়েছে, এ ক্ষেত্রে তাকে কিছুই ফেরত দেওয়া লাগবে না।

 

তাওবাকারী এসব সম্পদ কোনো ফকির-মিসকিনকে দিয়ে দেবে। পাশাপাশি সে আল্লাহর কাছে তাওবা করতে থাকবে, কেননা সে অন্যায়ভাবে কাউকে কিছু অর্জন করার সুযোগ দিয়েছে।

 

শেয়ার করুন…

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments