ইসলামী জীবন,
জুমার নামাজে যাওয়ার আগে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়াও জুমার দিনের একটি বিশেষ আমল। জুমার দিন পরিচ্ছন্ন হওয়ার তাকিদ এসেছে বিভিন্ন হাদিসে। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর মধ্যে গোসল অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) বলেন, যে ব্যাক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, মানুষকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে, ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে, তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি)
আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে জুমার দিন গোসল করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ জুমার নামাজে যেতে ইচ্ছা করলে সে যেন গোসল করে নেয়। (সহিহ মুসলিম)
এ ছাড়া জুমার গোসলের আগে নখ কাটা, গোঁফ ছাঁটা, নাভি ও বগলের নিচের অবাঞ্চিত লোম পরিস্কার করার দিকেও বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। এই কাজগুলো যেমন স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতার অন্তর্ভুক্ত, একইসাথে নবিজি (সা.) ও পূর্ববর্তী সব নবিদের সুন্নত। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, পাঁচটি কাজ ফিতরতের (মানুষের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার) অন্তর্ভুক্ত; খতনা করা, নাভির নিচের পশম কাটা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং গোঁফ ছাঁটা। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
ইসলামি আইন বিশারদদের মতে নাভির নিচের পশম প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করা মুস্তাহাব। আর তা জুমার দিনে করা উত্তম। প্রতি সপ্তাহে সম্ভব না হলে প্রতি দুই সপ্তাহে একবার, এর চেয়েও বিলম্ব হলে সর্বোচ্চ ৪০ দিনে যেন একবার অবশ্যই পরিষ্কার করা হয়। এর চেয়ে দেরি করা মাকরুহ।
আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নখ ও গোঁফ কাটা এবং বগলের চুল উপড়ানো ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কারের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, তা যেন চল্লিশ রাতের বেশি না রাখা হয়। (সহিহ মুসলিম)
তাই জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করার পাশাপাশি গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা, অবাঞ্চিত লোম পরিস্কার করা ইত্যাদি পরিচ্ছন্নতার দিকেও বিশেষ মনেযোগ দেওয়া কর্তব্য।