বিনোদন প্রতিবেদক :
এবার বিক্ষোভের মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হলেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা। আরজি করকাণ্ডে চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে বুধবার রাতে শ্যামবাজারের জমায়েতে অংশ নিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এদিন দক্ষিণ কলকাতায় যাদবপুরে মানুষের ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি।
কলকাতার একটি গণমাধ্যমের সূত্র মতে – আরজি করকাণ্ডের প্রতিবাদে গত ১৪ আগস্ট প্রথম ‘রাত দখল’ কর্মসূচির সাক্ষী ছিল গোটা রাজ্য। আজ ৫ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) কলকাতার সুপ্রিম কোর্টে আরজি করের শুনানির কথা মাথায় রেখে বুধবার ফের রাত দখলের আহ্বান জানানো হয়। সন্ধ্যা থেকেই কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় ভিড় বাড়তে শুরু করে। জমায়েতে অংশ নেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের মানুষজনও। রাত ৯টায় শুরু হয় ঘণ্টাব্যাপী আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ। এরপর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রতিবাদের ভিড় ক্রমশ বাড়তে শুরু করে।
ঘটনাক্রমে উত্তর কলকাতায় দেখা যায়, রাত ৯টার দিকে কলেজ স্কোয়ারে জমায়েতে ক্রমশ ভিড় বাড়তে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই জমায়েত মানবশৃঙ্খলে রূপ নেয়। প্রত্যেকের হাতে জ্বলে উঠল মোমবাতি। কণ্ঠে ধ্বনি – তোমার স্বর আমার স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর।’ এই ধ্বনি শোনা গেছে শ্যামবাজারেও। পাঁচমাথার মোড়ে মোমবাতি, মশালের আলোয় যেন অকাল দীপাবলি। আট থেকে আশি সন্ধ্যা থেকে পথে।
বর্ষীয়ানরা নিজেদের মেয়ে, নাতনির মুখ মনে করে জমায়েতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন। মোমবাতির সঙ্গে চলেছে পথে আঁকা, বার্তা লিখন। এই ভিড়ে মিশে বিচার চেয়েছেন টালিউডের অনেকেই। উপস্থিত ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তথাগত মুখোপাধ্যায়, দেবলীনা দত্ত, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, সোহম মজুমদার, সোলাঙ্কি রায়, ঋষভ বসু, রাতাশ্রী দত্তেরা। যাদবপুরের জমায়েতে উপস্থিত ছিলেন মিমি চক্রবর্তী। তিনি সেখানে মোমবাতি জ্বেলে প্রতিবাদ জানান।
ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ১২টা। স্তব্ধতা এই জনবহুল চত্বরে। এক মিনিট নীরবতা উৎসর্গ করা হলো নির্যাতিতাকে। মোমের স্নিগ্ধ আলো নিভে তখন সারি সারি মুঠোফোন জ্বলছে। আর তাই দেখে উপস্থিত মৃতার মা – বাবার গলা আবেগে কাঁপছে। তাদের আর্জি – এই প্রতিবাদের আগুন যেনো না নেভে। তারা কৃতজ্ঞ, এক সন্তানকে হারিয়ে লাখো সন্তানের জনক – জননী হয় উঠেছেন তারা।
জানা যায়, ওই সময় শ্যামবাজারের পাঁচমাথার মোড়ে জমায়েতে উপস্থিত হয়ে টালিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা বলেন, এত মানুষের প্রতিবাদ বৃথা যাবে না। আমি সুবিচারের আশায় রয়েছি। তিনি বলেন, কোচবিহারের মাথাভাঙায় আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ তিনি সমর্থন করেন না। ঠিক এর কিছুক্ষণ পরেই আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন অভিনেত্রী। তার উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। চার পাশ থেকে উলুধ্বনি এবং শঙ্খ বাজিয়ে ব্যঙ্গ করা হয় অভিনেত্রীকে। এর কিছুক্ষণ পর গাড়িতে উঠে শ্যামবাজার ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন ঋতুপর্ণা।