গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রতিনিধি, মতিউর রহমান দুলাল:
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ভয়াবহভাবে প্লাবিত হয় নদীমাতৃক বদ্বীপ ‘বাংলাদেশ’। বন্যার ভয়াবহ তাণ্ডবে ক্ষত বিক্ষত হয় ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও সিলেটের মৌলভীবাজারসহ মোট ১১টি জেলা। এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে মৌলবীবাজারের বন্যার্তদের পুনর্বাসন করতে অর্থ সহায়তা দিয়েছে সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলার পাবলিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘পাবলিক ইউনিভার্সিটিস স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব গোয়াইঘাট (পুসাগ)।
মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ও পুসাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল আহমেদ রাহী।
তিনি জানান, আমরা প্রথমে ফেনি, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুরের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে চাই। তবে সেই জায়গায় গেলে পরিবহণ খরচসহ অনেক টাকা খরচ হয়ে যাবে। তাই সর্বসম্মতিক্রমে পার্শ্ববর্তী জেলা মৌলভীবাজারের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই।
তিনি আরো বলেন, আমরা মূলত পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান করেছি। প্রথমে মৌলভীবাজার জেলায় বন্যায় প্রবলভাবে আক্রান্তদের একটা লিস্ট তৈরি করেছি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ভার্সিটিতে লেখাপড়া করে এই পরিবারকে আমরা লিস্টে প্রাধান্য দিয়েছি। পরবর্তীতে গত ৩ সেপ্টেম্বর আমাদের একটা টিম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে এই সহায়তা প্রদান করে।
মৌলভীবাজার জেলার চাঁদনীঘাট, সদর ইউনিয়ন, কামারচাক ইউনিয়ন, টেংরা ইউনিয়ন, উত্তরবাগ ইউনিয়ন, ফতেপুর ইউনিয়নসহ আশপাশ এলাকায় এই সহায়তা প্রদান করা হয়। আমরা যাদের টাকা প্রদান করেছি তাদের অনেকেই স্কুল, মাদ্রাসার ও অ্যাডমিশন পরীক্ষার্থী। যাদের বসতবাড়ির বন্যায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী আছে যাদের বাবা-মা নেই তাদেরকে আমরা অর্থ সহায়তায় প্রাধান্য দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা ২৫টা পরিবারকে অবস্থা বুঝে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ও সর্বোচ্চ ৭হাজার টাকা প্রদান করেছি। ফান্ডে আরো কিছু টাকা জমা রয়েছে। বাকি টাকাগুলো সকলের সম্মতিক্রমে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংগঠনটির সেক্রেটারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসাইন বলেন, দেশের সকল দুর্যোগ-দুর্বিপাকে দেশের যুবসমাজ সবসময় এগিয়ে আসে। আমাদের সংগঠনটির মূলত গোয়াইনঘাট উপজেলার শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে। তবে দেশের যেকোনো দুর্যোগে আমরা দেশের জন্য কাজ করতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম মোনায়েম বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। যারা আমাদেরকে এই কাজে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’